সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

অবশেষে ভারতীয় গণমাধ্যমও স্বীকার করল, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের সেই ভিডিওটি ভুয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবশেষে ভারতীয় গণমাধ্যমও স্বীকার করল, বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের সেই ভিডিওটি ভুয়া

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমে হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা হচ্ছে দাবি করে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ওই সব গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে ভুয়া ছবি, ভিডিও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এমন সব অপপ্রচারে মেতে আছে ষড়যন্ত্রকারীদের অনেকে। নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এমনই এক ভিডিও ফুটেজে দাবি করা হয়—হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে, যেটির সত্যতা পায়নি ভারতীয় ফেক্ট চেকিং সংস্থা বুম। তেমনটাই জানিয়েছে এবার খোদ ভারতীয় গণমাধ্যমই।

গতকাল শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওটি কি বাংলাদেশের শেরপুরে হিন্দুদের বাড়ি, ফসল ও গবাদিপশুর ওপর বাংলাদেশি মুসলমানদের হামলার? 

বুম তাদের অনুসন্ধান শেষে জানিয়েছে, ভিডিওটি ভুয়া দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশ শেরপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার দাবিতে প্রচারিত ফুটেজটি আসলে মুর্শিদপুর দরবার শরীফে হামলার। এটি বাংলাদেশের শেরপুরে মুসলমানদের একটি  মাজার।

এর আগে, শুক্রবার বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা রিউমার স্ক্যানার তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, ভারতের অন্তত ৪৯ গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নিয়ে ভুয়া খবর প্রকাশ করা হয়েছে।

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে, রাষ্ট্র ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ১২ আগস্ট থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত অন্তত ১৩টি ভুয়া খবর পাওয়া গেছে। এমন ভুয়া খবর প্রচারের তালিকায় ভারতের অন্তত ৪৯টি গণমাধ্যমের নাম উঠে এসেছে।

কোন গণমাধ্যমে কতটি ভুয়া খবর:

রিপাবলিক বাংলা সর্বাধিক পাঁচটি গুজব প্রচার করেছে। পরবর্তী অবস্থানে রয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস, জি নিউজ এবং লাইভ মিন্ট, যারা প্রত্যেকে অন্তত তিনটি করে গুজব প্রকাশ করেছে। এছাড়া, রিপাবলিক, ইন্ডিয়া টুডে, এবিপি আনন্দ এবং আজতক অন্তত দুটি করে গুজব প্রচার করেছে। বাকি ৪১টি গণমাধ্যম অন্তত একটি করে গুজব প্রচার করেছে।

গুজবের মধ্যে যা ছিল:

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর তার নামে ভুয়া খোলা চিঠি, মুসলিম ব্যক্তির নিখোঁজ পুত্রের সন্ধানে মানববন্ধন করার ভিডিওকে হিন্দু ব্যক্তির দাবিতে প্রচার, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইসিইউতে ভর্তি হওয়ার ভুয়া খবর, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ভিত্তিহীন দাবি, ট্রাম্পের বিজয়ের পর ড. ইউনূস ফ্রান্সে পালিয়ে যাওয়ার ভুয়া দাবি, পাকিস্তানি জাহাজের মাধ্যমে অস্ত্র আনার মিথ্যা দাবি, নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী হিসেবে প্রচার, বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল বন্ধ হওয়া গুজব, বাংলাদেশে মুসলিমদের হামলায় হিন্দু মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের দাবিতে ভারতের প্রতিমা বিসর্জনের ভিডিও প্রচার, শ্যামলী পরিবহনের বাসে হামলার মিথ্যা তথ্য চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবীর ওপর হামলার ভুয়া দাবি এবং বাংলাদেশে জঙ্গি হামলা হতে পারে জানিয়ে যুক্তরাজ্য ভ্রমণ সতর্কতা জারির বিভ্রান্তিকর খবর।

টিএইচ