প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ প্রতিশোধপরায়ণ নয়। আওয়ামী লীগ প্রতিশোধপরায়ণ হলে দেশে বিএনপি-জামায়াতের অস্তিত্ব থাকত না। রোববার (২ জুলাই) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে তারা ক্ষমতায় এলে তাদের অত্যাচার থেকে কেউই বাদ যায়নি। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী রূপটা দেশের মানুষ দেখেছে। অর্থপাচার, জঙ্গিবাদ সৃষ্টির মতো অপকর্ম করেছে তারা। যারা জীবন্ত মানুষকে হত্যা করতে পারে, তাদের কাছে রাজনীতি বলে কিছু নেই।
তিনি বলেন, আমরা এই দেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বন্ধ করেছি। জনগণের ভাগ্য নিয়ে আর যাতে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সে ব্যবস্থা আমরা করেছি।
যুবকদের উদ্যোক্তা হওয়ার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, যুবকদের বলব, লেখাপড়া ভালোভাবে করতে হবে। নিজেদের উদ্যোক্তা হতে হবে। অনাবাদী যা জমি আছে সেগুলোতে চাষাবাদের উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে খাদ্যের ঘাটতি হবে না।
তিনি বলেন, যেখানে জাতির পিতার নাম মুছে ফেলে দেওয়া হয়েছিল, সে নাম আবার ফিরে এসেছে। হেলিকপ্টারে করে আমার বাবাকে এখানে (টুঙ্গিপাড়ায়) নিয়ে এসে কবর দিল। কেন? যেন টুঙ্গিপাড়ায় কেউ আসতে না পারে। এই বাড়িটি সিলগালা করে রেখে দিয়েছিল। এখানে আমার চাচি ও ছোট বাচ্চাদেরও থাকতে দেওয়া হয়নি। এরকম অত্যাচার করা হয়েছিল আমাদের ওপর।
তিনি আরও বলেন, আজকে সেই টুঙ্গিপাড়ায় আসতে পারি মাত্র আড়াই ঘণ্টায়। এটা সম্ভব হয়েছে পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে। সেটাও নির্মাণে বাধা দিয়েছিল, টাকা ফেরত নিয়েছিল। কোনো দুর্নীতি হয়নি বলে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। তখনই নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম। বাংলাদেশের মানুষের সহযোগিতা পেয়েছিলাম বলেই পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছিল।
এর আগে, শনিবার (১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ নির্বাচনি এলাকা কোটালীপাড়ায় পৌঁছান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কোটালীপাড়া পৌঁছে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় প্রাঙ্গণে নিম (মারগোসল), বকুল (স্প্যানিশ চেরি) এবং আমের তিনটি চারা রোপণ করেন তিনি। এরপর নবনির্মিত কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর তিনি কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দান করেন।
অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে পৈতৃক নিবাস টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়া ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
সেখানে পৌঁছে দেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ এবং মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।
টিএইচ