শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

একদিনে রাজধানীর ৪ স্থানে অগিকাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

একদিনে রাজধানীর ৪ স্থানে অগিকাণ্ড

মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর চার স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে দেড় শতাধিক ঘর ও কয়েকটি দোকান পুড়ে ছাই হয়েছে। দগ্ধ হয়েছেন সাতজন। রোববার গভীর রাত থেকে গতকাল সোমবার (২৭ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সময়ে এসব স্থানে আগুন লাগে।

রায়েরবাগ: এর মধ্যে গত রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর রায়েরবাগে একটি ভুসির গুদামে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে সাড়ে ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে ডিউটি অফিসার এরশাদ হোসেন জানান, আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণসহ বিস্তারিত এখনো কিছুই জানা যায়নি, তদন্ত সাপেক্ষে সেগুলো জানা যাবে।

কাটাবন বাটা সিগন্যাল: গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কাটাবনের বাটা সিগন্যাল এলাকার শেলটেক কম্পিউটার সিটি ভবনের পঞ্চম তলায় আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাত ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার খালেদা ইয়াসমিন বলেন, ‘সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে কাটাবনে একটি ভবনে আগুন লাগার খবর পাই আমরা। ১০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করে। আগুনে চারটি দোকান পুড়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের একজন সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, এখন তিনি শঙ্কামুক্ত। এ ছাড়া ওই ভবনের ছয়জন বাসিন্দাকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নেওয়া হয়েছে।’

মহাখালীর সাততালা বস্তি: সকাল পৌনে ৭টার দিকে মহাখালীর সাততালা বস্তিতে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। পরে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট সকাল ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে সাততালা বস্তিতে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। তদন্ত সাপেক্ষে এগুলো জানা যাবে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে হতাহতের কোনো খবর আসেনি।’

বনানী থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সাততালা বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক টিনশেড বসতঘর পুড়ে গেছে। এই আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পাঁচ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

কাপ্তানবাজার সুইপার কলোনি: কাপ্তানবাজারে সুইপার কলোনিতে গত রবিবার দিবাগত রাত ৩টা ২০ মিনিটে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সাতটি ইউনিট ভোর সাড়ে ৪টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে দগ্ধ হয়েছে সাতজন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কাপ্তানবাজারের এই আগুনের পাশে মেয়র হানিফ উড়ালসেতুর পিলার ও নিচের কংক্রিটের একাংশ। ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুনের কারণে হানিফ ফ্লাইওভারে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করা পরীক্ষা-নিরীক্ষা সাপেক্ষ। উড়ালসেতুর নিচে এভাবে বসবাস ঝুঁকিপূর্ণ। এমতাবস্থায় বসবাসকারীদের অন্যত্র সরিয়ে না নিলে এ রকম ঝুঁকি আরো বাড়বে।

কাপ্তানবাজারে অগ্নিকাণ্ডের খবরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘এই সুইপার কলোনিতে টিনশেড ঘরে মানুষ বসবাস করে। এখানে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে রান্না হতো।

এখানে অনেক দাহ্য পদার্থ ছিল। এ কারণে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে, কলোনিতে লাগা আগুন যেন অন্যদিকে ছড়িয়ে না পড়ে। কারণ পাশে আরো অনেকের বসবাস এবং কিছু আবাসিক ভবন রয়েছে।’

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। এখানে দাহ্য পদার্থ ছিল, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে। যেকোনো কারণেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে, আমরা তদন্ত করে দেখব।’

টিএইচ