সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদাম স্থানান্তরে ডিএসসিসি’র বাণিজ্য অনুমতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদাম স্থানান্তরে ডিএসসিসি’র বাণিজ্য অনুমতি

নিমতলী ও চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডের পর পুরান ঢাকা হতে শ্যামপুরে স্থানান্তরিত হওয়ায় রাসায়নিক গুদাম হিসেবে ১টি প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্য অনুমতি প্রদান করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। এর ফলে দীর্ঘ ১ যুগ পর রাসায়নিক গুদাম হিসেবে প্রথম কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্য অনুমতি দিয়েছে ডিএসসিসি।

শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক রাজধানীর শ্যামপুরে বাস্তবায়িত অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম প্রকল্পে স্থানান্তরিত হওয়ার প্রেক্ষিতে ‘মেসার্স রয়েল টন লেকার কোটিং’ নামক রাসায়নিক প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্য অনুমতি নবায়ন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। শ্যামপুরে স্থানান্তরিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বাণিজ্য অনুমতি নবায়নের আবেদন করা হলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ডিএসসিসি উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানকে নবায়নকৃত এই বাণিজ্য অনুমতি দেয়।

উল্লেখ যে, গত বছরের ৪ জুন শ্যামপুরে ‘অস্থায়ী ভিত্তিতে রাসায়নিক দ্রব্য সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গুদাম’ প্রকল্প চালু করা হয়। তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস সেসব গুদাম উদ্বোধন করেন। নিমতলী অগ্নিকাণ্ডের ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ২০১৩ সাল হতে পুরান ঢাকায় অবস্থিত এসব রাসায়নিক গুদাম ও প্রতিষ্ঠানকে এবং চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডের পর ২০১৯ সাল হতে রাসায়নিক গুদাম ও প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিস্ফোরক জাতীয় রাসায়নিক ব্যবহৃত হয় এ ধরনের প্লাস্টিক কারখানা ও প্রতিষ্ঠানকে নতুন করে বাণিজ্য অনুমতি প্রদান ও বাণিজ্য অনুমতি নবায়ন বন্ধ রাখে।

মন্ত্রিপরিষদের নির্দেশনার আলোকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর এবং বিস্ফোরক পরিদপ্তরসহ সরকারের আরও বিশেষ তিনটি সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে ৩টি দল গঠন করে পুরান ঢাকায় (অঞ্চল ৩,৪ ও ৫) অবস্থিত বিস্ফোরক জাতীয় প্লাস্টিক ও রাসায়নিক ব্যবসা পরিচালনাকারী গুদাম ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রস্তুত করে।

২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মন্ত্রিপরিষদে সে তালিকা প্রেরণ করে। প্রেরিত তালিকায় পুরান ঢাকায় অবস্থিত সর্বমোট ১ হাজার ৯২৪ টি রাসায়নিক গুদামের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সরবরাহ করা হয়। তালিকায় রাসায়নিকের ধরন এবং ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ, মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ ও নিম্ন ঝুঁকিপূর্ণ গুদামের সংখ্যা এবং এসব গুদামে রাখা রাসায়নিক দ্রব্যাদির নামও উল্লেখ করা হয়।

এ প্রেক্ষিতে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আশা করি, তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে অন্যান্য সকল রাসায়নিক গুদাম ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও সেখানে স্থানান্তরিত হবে। নিরাপদ হবে আমাদের পুরাতন ঢাকার সামগ্রিক পরিবেশ। যারা স্থানান্তরিত হবে না পর্যায়ক্রমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাশাপাশি এসব রাসায়নিক গুদাম ও প্রতিষ্ঠানকে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে ৩১০ একর জায়গার উপর যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে আমরা জেনেছি। জননিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টিকারী এসব রাসায়নিক গুদাম ও প্রতিষ্ঠান যদি সেখানে স্থানান্তরিত না হয় তাহলে আমরা সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করব।’

রাসায়নিক গুদাম উদ্‌বোধনী অনুষ্ঠানে কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘পুরান ঢাকা হতে রাসায়নিক দ্রব্যাদি স্থানান্তর সংক্রান্ত নীতিমালা যেন ব্যবসাবান্ধব হয়। স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় ব্যবসায়ীরা যেন উৎসাহিত ও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, সে বাস্তবতা আমলে নেওয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করছি। এসব বিপজ্জনক রাসায়নিক সামগ্রী পর্যায়ক্রমে স্থানান্তরের মাধ্যমে ঢাকাকে আমরা একটি বাসযোগ্য ও দুর্যোগ সহনশীল নগরীতে পরিণত করতে পারব।’

টিএইচ