শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

রণক্ষেত্র ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকা, ব্যাপক সংঘর্ষ-ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক

রণক্ষেত্র ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকা, ব্যাপক সংঘর্ষ-ভাঙচুর

রাজধানীর ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্র রূপ নিয়েছে। সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ এবং ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

এ সময় ডিএমআরসি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় লোকজনও। ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

সোমবার সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকেন। সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা বেলা ১০টার দিকে লাঠিসোঁটা হাতে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে কবি নজরুল কলেজের দিকে রওনা দেন। তাদের পরিকল্পনা ছিল কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একসঙ্গে ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের দিকে যাওয়া।

তবে, কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানালেও, একটি অংশ তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে মাহবুবুর রহমান কলেজের দিকে যাত্রা করে।

পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যখন শিক্ষার্থীরা ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে ভাঙচুর চালায়। এ সময় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকার সড়কে। এতে স্থানীয় পরিবেশও চরম উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে।

এর আগে রোববার সন্ধ্যায় সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, কলেজে ভাঙচুরের প্রতিবাদে এবং দোষীদের গ্রেফতারে প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে সোমবার বিক্ষোভ মিছিল করবেন।

এই ঘোষণার অংশ হিসেবে সোমবার সকাল থেকে তারা সড়কে অবস্থান নেন।

সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে। অভিযোগ ওঠে, চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর বিচার দাবি করে রোববার দুপুর থেকেই বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতাল ঘেরাও করেন। এক পর্যায়ে এই বিক্ষোভ সংঘর্ষে রূপ নেয়। হাসপাতাল ছাড়াও সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজেও ভাঙচুর চালানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সংঘর্ষ চলাকালে বিভিন্ন সড়কে শিক্ষার্থীদের লাঠিসোঁটা হাতে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা যায়। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার কারণে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় দুটি কলেজেই পরীক্ষা চলছিল। শিক্ষার্থীরা হামলা চালালে পরীক্ষার্থীরা ভয়ে এদিক-ওদিক ছুটতে থাকেন।

এদিকে, ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তাদের ভূমিকা ছিল নীরব। লালবাগ জোনের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ব্যাপারে তারা অবগত নন। তবে স্থানীয়রা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সংঘর্ষ ও হামলায় সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ এবং ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্তরা ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

টিএইচ