রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে উদ্ধারকাজ আবার সীমিত পরিসরে শুরু করেছেন ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা। বুধবার (৮ মার্চ) সকালে তারা ভবনটির খসে পড়া পলেস্তারা ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরাতে শুরু করেন তারা। বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে কমপক্ষে ১৮ জনের লাশ রাখা হয়েছে। আর ২০০ জনের বেশি মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ১০০ জনের বেশি মানুষকে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নিহতরা হলেন-
১. মো. সুমন (২১), ১ নং সুরি টোলা, বংশাল ঢাকা, গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মেঘনা থানা।
২. মো. ইসহাক মৃধা (৩৫), কাজির হাট, বরিশাল। ইসলামপুরে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।
৩. মো. মুনসুর হোসেন (৪০), পশ্চিমপাড়া যাত্রাবাড়ী।
৪. মো. ইসমাইল (৪২), ৯৭ লুৎফর রহমান লেন, আলু বাজার।
৫. মো. আল আমিন (২৩), পশ্চিম লালপুর, মতলব, চাঁদপুর। আলামিন বিবিএ শিক্ষার্থী বলে তার ভাই হাবিবুর রহমান জানান।
৬. মো. রাহাত হোসেন (১৮), মাস্টার বাড়ি, দক্ষিণ চুনকুটিয়া, কেরানীগঞ্জ।
৭. মমিনুল ইসলাম (৩৮), ১১৫/৭/৫ ইসলামবাগ, চকবাজার।
৮. নদী বেগম (৩৬), ১১৫/৭/৫ ইসলামবাগ, চকবাজার থানা।
৯. মো. মাঈন উদ্দিন (৫০), গ্রাম-সৈয়দপুর, মুন্সিগঞ্জ সদর।
১০. নাজমুল হোসেন (২৫), ৪৭ নং কে পি ঘোষ স্ট্রিট, বংশাল।
১১. ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), চর বেউথা গ্রাম, মানিকগঞ্জ সদর।
১২. আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), মুন্সিগঞ্জ, গজারিয়া, বালুয়া কান্দি।
১৩. আকুতি বেগম (৭০), ১৮/১ আগামাসি লেন, বংশাল।
১৪. মো. ইদ্রিস মির (৬০), মীর হাজারীবাগ যাত্রাবাড়ী,
১৫. নুরুল ইসলাম ভূইয়া (৫৫), মাতুয়াইল, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
১৬. মো. হৃদয় (২০), সিদ্দিক বাজার জাবেদ গলি, বংশাল।
১৭. মো. সম্রাট (২২)
১৮ . মোহাম্মদ সিয়াম (২০)
এর আগে, ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে উদ্ধারকাজ স্থগিত করা হয়েছিল। ফায়ার সার্ভিস আশঙ্কা করছে, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। তাই সেনাবাহিনীর সহায়তা ছাড়া উদ্ধারকাজ করা সম্ভব নয় বলেও জানানো হয়েছে।
এদিকে বুধবার সকাল থেকে সেনাবাহিনীর উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
মঙ্গলবারের বিস্ফোরণে সাততলা ভবনের তিনতলা পর্যন্ত পুরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেজমেন্ট। সেখানে কী হয়েছে তা এখনও সবার অজানা। ভবনটির একদিকের বেশ কয়েকটি কলাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানে প্রবেশ করতে পারছে না ফায়ার সার্ভিসসহ উদ্ধারে অংশ নেয়া কেউ।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভবনের বেজমেন্ট এবং নিচতলা একদমই ধসে গেছে। এ অবস্থায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। এটাকে ‘শোরিং’ করে (কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায়) উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করা হবে।’
তিনি জানান, সেনাবাহিনীর সহায়তায় এ কাজ করা হবে। ভবনটি এখন স্টেবল করতে হবে। না হলে ভেতরে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। ভেতরে কতজন আছে, সে সংখ্যাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
উদ্ধারকাজে অংশ নেয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মঙ্গলবার রাতে জানিয়েছিলেন, বিস্ফোরণে এমনভাবে ভবনটি ধসে পড়েছে যে ভেতরের বেজমেন্ট ও নিচতলায় ঢোকার কোনো অবস্থা নেই। জায়গায় জায়গায় ইট ঝুলে আছে। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করছেন। তারা বের হওয়ার পর আরেকটি টিম ভেতরে ঢুকেছে।
টিএইচ