পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চায় পাকিস্তান। তবে আমি বলেছি, ১৯৭১ সালে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর সংঘটিত নৃশংসতার জন্য পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
শ্রীলঙ্কা সফর শেষে রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
শ্রীলঙ্কার ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের ফাঁকে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খারের সঙ্গে বৈঠক করেন আব্দুল মোমেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চায় পাকিস্তান। শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকেও বিষয়টি জানিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার। জবাবে মোমেন তাকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চায় পাকিস্তান একাত্তরের গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাক। ক্ষমা চাইলে সম্পর্ক উন্নয়নে তাদের পক্ষে ওকালতি করারও আশ্বাস দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে এর জবাবে হিনা রব্বানি কিছুই বলেননি বলে জানিয়েছেন মোমেন।
ওই বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, তিনি আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চান। আমি বলেছি, সম্পর্ক বাড়ানোর একটি বড় উপায় হলো, আপনারা যে গণহত্যা করেছেন ১৯৭১ সালে এটার জন্য আপনারা পাবলিকলি ক্ষমা চান। এটা যদি হয় আমি আপনাদের হয়ে ওকালতি করব, সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে। এটা হলে আমি তর্ক করব। তা না হলে আমার জন্য কষ্ট হবে।
মন্ত্রীর বক্তব্যে দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর অবস্থান কেমন ছিল জানতে চান সাংবাদিকরা। মোমেন বলেন, তিনি একটু এড়িয়ে গেছেন। কোনো উত্তর দেননি। তবে তিনি বলেছেন, তাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। আমি বলেছি, আমাদের এখানেও সীমাবদ্ধতা আছে।
তিনি বলেন, সম্পর্ক বাড়ানোর বিষয়ে তাদের আচরণ খুবই ইতিবাচক। তারা চাচ্ছে আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক করতে। শুধু আমাদের সঙ্গে নয়, ভারতবর্ষের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো করতে চায় তারা।
কোন কোন খাতে পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চায়, এমন প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, তারা ফরেন অফিস কনসালটেন্ট (এফওসি) চাচ্ছে। প্রথমে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে চায়। আমরা বলেছি, আপনারা ব্যবসা করছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের ব্যবসাটা একপক্ষীয় হয়ে গেছে। আমি বলেছি, আপনারা অনেক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছেন; অ্যান্টি ডাম্পিং আছে, এগুলো তুলে নেন।
কলম্বোয় নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. বিমলা রাই পাউডিয়ালের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে তুলে ধরে ড. মোমেন জানান, সার্ক সামিট করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, সার্ক সামিট করার জন্য ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করুন। আমরা পাশে আছি।
ড. মোমেন জানান, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলাপ হয়েছে। শ্রীলঙ্কা বৌদ্ধ অধ্যুষিত দেশ৷ সে কারণে মিয়ানমারে সঙ্গে সম্পর্ক ভালো। আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে শ্রীলঙ্কার সহযোগিতা চেয়েছি।
টিএইচ