প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার হাত ধরে বাংলাদেশের বিচারকাঠামো গঠিত হয়েছে। মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, কৃষি, শিল্প, স্বাস্থ্য সবকিছু তিনি করে গেছেন। সমুদ্র সীমা বাড়ানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও তিনি শুরু করেছেন।
শনিবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আইনজীবীদের মহাসমাবেশে এ সবকথা বলেন তিনি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে সারাদেশ থেকে আগত আইনজীবীরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আইনজীবীদের কাছে দাবি রেখে বলেন, আস্তে আস্তে আর্থিক সচ্ছলতা আসলে আপনাদের স্বল্পমূল্যে জমি বরাদ্দ দেব। তবে একটা শর্ত আছে, অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে যারা জড়িত, সেই মামলাগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে। এটাই আমার অনুরোধ এবং দাবি।
প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, আপনারা জানেন বিএনপি কত নেতাকর্মী হত্যা করেছে, চোখ তুলে নিয়েছে, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ২০২৩ সালে জামায়াত বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। যারা অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, যারা পুলিশ হত্যা করেছে, সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে, চলমান বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছে। এরা এত অন্যায় করেছে, তাদের শাস্তি হবে না কেন? তাদের শাস্তি দেরিতে হবে কেন? সে বিষয়ে আপনাদের নজর দিতে হবে। অন্যায়কে প্রশ্রয় দিলে এরা বাড়বে। সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি জেলায় সিজিএম আদালত নির্মাণ, নতুন ট্রাইব্যুনাল করা হয়েছে। বিদেশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিচারের মান উন্নত করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২২তলা বিশিষ্ট বিজয় একাত্তর ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। বিচারকদের আবাসন সমস্যা দূর করতে বিচারপতিভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আদিমপুরে জাজেস কোয়ার্টার নির্মাণ হয়েছে, আইনজীবী সমিতি ভবন করে দেওয়া হয়েছে।
জিয়াউর রহমানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু ইনডেমনিটি অধ্যাদেশই নয়, নির্বাচনী ব্যবস্থা নষ্ট করা, হ্যাঁ-না ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা। সে নির্বাচনে সামরিক আইন ও বিধান ভঙ্গ করে নিজেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আইনজীবী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বেলা ১১টায় বার কাউন্সিলের ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ১৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ১৫ তলা বিশিষ্ট ভবনটি নির্মিত হয়। ভবনটিতে চারটি লিফট, ফায়ার ফাইটিং ব্যবস্থা, সিসি ক্যামেরা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং পুরুষ-নারী-প্রতিবন্ধীদের জন্য পৃথক শৌচাগার রয়েছে।
আইন ও বিচার বিভাগের তত্ত্বাবধানে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের নকশায় নির্মিত ভবনটিতে পর্যাপ্ত অফিস স্পেস, মিটিং রুম, দুটি কনফারেন্স রুম, রেকর্ড রুম, স্টোর রুম, ওয়েটিং এরিয়া, ক্যাফেটেরিয়া, ডে-কেয়ার সেন্টার, এক্সিবিশন স্পেস, রিসিপশন, রেজিস্ট্রেশন রুম, ব্যাংক, অ্যাকাউন্স সেকশন, আইটি সেকশন ইত্যাদি রয়েছে। আইনজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ কক্ষ, পাঁচটি ট্রাইব্যুনাল কক্ষ, সুপরিসর মাল্টিপারপাস হল, নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক নামাজ কক্ষ রয়েছে।
এ ছাড়া টিভি লাউঞ্জ, কিচেন ও ডাইনিং হলসহ শতাধিক আইনজীবীর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রকল্পে আরবরিকালচারের মাধ্যমে ল্যান্ডস্কেপিং করা হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সাবস্টেশন ও জেনারেটরের মাধ্যমে পৃথক বৈদ্যুতিক লাইন সংযুক্ত করা হয়েছে।
টিএইচ