বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে চায়। আর সেই লক্ষ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করা নিয়ে আলোচনা করবে দুই দেশ। আলোচনাধীন এফটিএ দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করার জন্য সিঙ্গাপুরকে তাগিদ দেবে বাংলাদেশ।
আজ বুধবার ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের সভা ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) বসছে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর। দুই দেশের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে হতে যাওয়া এফওসিতে মূল ফোকাস থাকছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে। রাজনৈতিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক, বিনিয়োগ, কৃষি, অবকাঠামো খাতে বিনিময়, কারিগরি সহায়তা এবং উচ্চতর দক্ষতা বিনিময় ও উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময় করার সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হবে। মূল ফোকাস থাকবে অবকাঠামো এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করা।
মন্ত্রণালয়ের এ কর্মকর্তা বলেন, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার বিষয়ে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে। সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী ঢাকায় এসেছেন। তখন দুই দেশ সহযোগিতা চুক্তি করেছে। তার অধীনে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনাসহ বাংলাদেশে তাদের যে বিনিয়োগ সেটা আরও সুসংগঠিত করার বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছানো বা সুসংগঠিত করার বিষয়ে আলোচনা হবে এফওসিতে।
এছাড়া আমাদের নিয়মিত বিষয় যেগুলো আছে, সেগুলো তো থাকছেই। আমরা রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের সমর্থন চাই। পাশাপাশি আসিয়ানের গুরত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে জোটটির সেক্টরাল ডায়লগ পার্টনার হতে তাদের সহযোগিতা চাই। এছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গণে তাদের সমর্থন চাই।
বৈঠকে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। অন্যদিকে সিঙ্গাপুরের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন দেশটির আইন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পারমানেন্ট সেক্রেটারি লিউক গো।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বৈঠকে শিক্ষার্থী এবং পেশাদার পর্যায়ে প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উদ্দেশে বিভিন্ন বৃত্তি চালুকরণ, কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধিকরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা, বাংলাদেশি শ্রমিকদের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিতকরণ ও স্বার্থসংরক্ষণসহ আইসিটি, কানেক্টিভিটি , চিকিৎসা কূটনীতি নিয়েও আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এফটিএর বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চাই। আমরা চাই সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ুক, সেজন্য আমরা তাদের সঙ্গে এফটিএ করতে চাই। তারাও করতে রাজি। যত তাড়াতাড়ি এটা করতে পারি, আমাদের মঙ্গল হবে।
গত জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে জাকার্তায় ৩০তম আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামে যোগ দেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে ফোরামের ফাঁকে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণণের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন ড. মোমেন। সেই বৈঠকে এফটিএ দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা নিয়ে আলোচনা করেন দুই মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে সহযোগিতা স্মারক (এমওসি) চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। এ চুক্তি উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে এফটিএ করার কাজকে এগিয়ে নিতেই করা হয়েছে।
টিএইচ