দীর্ঘ বিরতির পর আজ থেকে শুরু হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল। তবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের প্রথম দিন হলেও নেই যাত্রীর চাপ। ফলে অনেকটা আসন খালি নিয়েই প্রথম দিন চলাচল করছে যাত্রীবাহী এসব ট্রেন। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় টানা ২৩ দিন ধরে বন্ধ থাকার পর গতকাল সোমবার (১২ আগস্ট) থেকে মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
তবে দীর্ঘ বিরতির পর যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করলেও যাত্রীর চাপ না থাকাকে প্রচার না হওয়া এবং প্রথম দিন হওয়া কারণ হিসেবে দেখছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে যাত্রীর চাপ না থাকার চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাধারণ দিনের তুলনায় যাত্রীর চাপ নেই বললেই চলে। ট্রেনের অধিকাংশ বগিতেই আসন খালি পরে থাকছে। এছাড়া সকাল থেকে মহুয়া ও তুরাগ এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি ছেড়ে গেছে। এবং কর্ণফুলী কমিউটার ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘ দিন পর গতকাল থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল মালবাহী ট্রেন চলাচল করেছে। আজ যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করেছে। তবে তুলনামূলক যাত্রী কম। আজ প্রথম দিনতো তাই অনেকেই আসেনি। তাছাড়া অনেকই জানেও না। কারণ আজ থেকে যে ট্রেন চলছে এটা প্রচার কম হওয়ার কারণে অনেকেই জানে না।
তিনি বলেন, তবে আগামী পরশু দিন বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) থেকে সম্পূর্ণরূপে সব ধরনের ট্রেন চলাচল শুরু করবে। বৃহস্পতিবার থেকে যাত্রীর চাপ বাড়বে।
ভৈরব যাবে ওয়ালীউল্লাহ নামের এক যাত্রী। তিনি বলেন, অনেকদিন পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ভেবেছিলাম ট্রেনে প্রচুর ভিড় হবে। কিন্তু এসে দেখলাম একদম ফাঁকা।
অন্য আরেক যাত্রী মো. রাব্বি বলেন, আমি নিয়মিত ট্রেনে যাতায়াত করি। সাধারণত এই সময়ে ট্রেনে কোন সিট কখনও ফাঁকা পাওয়া যায় না। আজ ট্রেন ফাঁকা। অনেক সিটও খালি পরে আছে।
এর আগে গতকাল সোমবার (১২আগস্ট) থেকে শুরু হয় মালবাহী ট্রেন চলাচল। তার আগের দিন রোববার (১১ আগস্ট) বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালক জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.নাহিদ হাসান খাঁন গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মঙ্গলবার থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু টানা ২৩ দিন ধরে বন্ধ থাকার পর আগামীকাল সোমবার থেকে মালবাহী ট্রেন ও ১৩ আগস্ট থেকে মেইল, এক্সপ্রেস, লোকাল, কমিউটার ট্রেন এবং ১৫ আগস্ট থেকে আন্তঃনগর ট্রেন পর্যায়ক্রমে পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পারাবত ও জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট আগামীকাল (সোমবার) বিকাল ৫টা থেকে ক্রয় করা যাবে।
এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় সরকার কারফিউ জারির পর গত ১৯ জুলাই থেকে পুরোপুরি বন্ধ হয় ট্রেন চলাচল। ১৩ দিন বন্ধ থাকার পর গত ১ আগস্ট থেকে স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল শুরু করে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথমদিন ফের বন্ধ করা হয় ট্রেন চলাচল।
গত রোববার (৪ আগস্ট) রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. নাহিদ হাসান খান এক বার্তায় জানান, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে সারা দেশের ট্রেন চলাচল।
টিএইচ