একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেয়ায়, ভোটের দিবাগত রাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার রায় পিছিয়ে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হয়।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক (জেলা জজ) ফাতেমা ফেরদৌস শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে গত ২৯ নভেম্বর অধিকতর যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ ধার্য করেন বিচারক।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে ওই গৃহবধূকে (৪০) মারধর করে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে ঘটনাটি ঘটায় তখন দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনায় আসে। নির্যাতনের শিকার নারী চার সন্তানের জননী ছিল। তার অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেয়ার জেরে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে চর জব্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। পরে মামলার তদন্ত শেষে সুবর্ণচর উপজেলা আ.লীগের বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক জাকির হোসেন।
রায় ঘোষণার ব্যাপার নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামী অভিযোগ করে বলেন, তারা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। কয়েকটি মোটরসাইকেল নিয়ে কতিপয় ব্যক্তি তাদের সামনে মহড়া দিচ্ছে। বিষয়টি তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও চরজব্বর থানার ওসিকে অবহিত করেছে। ওসি বলেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে নিরাপত্তা দেয়া হবে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ছালেহ আহম্মদ সোহেল খান বলেন, এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৩ জন স্বাক্ষী উপস্থাপন করে। আসামিপক্ষের পাঁচজন সাফাই স্বাক্ষী প্রদান করে। কোনো স্বাক্ষীই ভোট কেন্দ্রে পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেয়ায় জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেনি।
মামলায় রুহুল আমিন মেম্বারসহ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ১৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মো. মিন্টু ওরফে হেলাল (২৮) নামে একজন আসামি ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। ১৬ জানুয়ারি মামলাটির রায় ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল, বিচারক রায়ের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি পুুনরায় ধার্ষ করেন।
আদালতে বাদীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা বারের সাবেক সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রছুল মামুন বলেন, সুবর্ণচরে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের সেই আলোচিত ঘটনায় কারাগারে রয়েছে ১৫ জন আসামি। তাদের মধ্যে ৮আসামি নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
চরজব্বর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম বাদীর বাড়ির সামনে মোটরবাইক নিয়ে টহল দেয়ার বিষয়ে অভিযোগ নাকচ করে বলেন, বিষয়টি কেউ আমাকে অবহিত করেনি।
টিএইচ
