নাটোরের বড়াইগ্রামে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে দুই শিশু সন্তানসহ মায়ের মৃত্যু হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন আরও দুইজন। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার খাকসা উত্তরপাড়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হচ্ছেন, মা সোমা বেগম (৩৫) এবং তাঁর দুই শিশু সন্তান অমিয়া খাতুন (১০) ও মোঃ অমর হোসেন (০৫)। মৃতের স্বামী অগ্নিদগ্ধ অলি বক্স প্রামানিক (৪২) ও প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেনকে (৩৭) নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার (৮ মার্চ) সকাল ১০টায় জানাজার নামাজ শেষে তিনজনের মরদেহ স্থানীয় সামাজিক গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি আবু সিদ্দিক জানান, মৃত সোমা বেগম রান্না ঘরে খাবার প্রস্তুত করতে গিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। এতে বিকট শব্দ হয় এবং মুহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বাড়ির বাইরে অবস্থানরত সোমা বেগমের ট্রাক চালক স্বামী অলি বক্স বাড়িতে ঢুকে তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।
এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশী আনোয়ার হোসেন তাদের উদ্ধারে এগিয়ে গেলে তিনিও দগ্ধ হন। আগুনের তীব্রতার জন্য ঘরে থাকা ওই শিশুরা বের হতে পারেনি। ফলে আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। আর তাদের মা সোমা বেগম রান্নাঘরেই আগুনে পুড়ে মারা যান। আগুনের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে,স্থানীয় লোকজন কাছে যেতে পারেননি।
খবর পেয়ে নাটোর ও বনপাড়া ফায়ার সার্ভিসের দুইটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। তবে আগুনে বসতবাড়ির সব কিছু পুড়ে ভষ্মীভূত হয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহতদের প্রথমে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে নাটোর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
নাটোর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক এ কে এম মুর্শেদ জানান, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা ঘটনার সময় আশপাশের মানুষজন বিকট শব্দ শুনতে পেয়েছেন এবং ঘটনাস্থলে সিলিন্ডারটি বিষ্ফোরিত হওয়ার কিছু নমুনাও তারা পেয়েছেন।
তবে স্থানীয়রা কেউ কেউ বলছেন, বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে প্রথমে আগুন লাগে টিনের চালায়। পরে তাপদাহে রান্নাঘরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়ে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর মৃতদের মধ্যে দুই শিশুর মরদেহ শয়নকক্ষ এবং মা সোমা বেগমের মরদেহ রান্নাঘরে সিলিন্ডারের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডে তিনজনের মৃত্যুর খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. মারিয়াম খাতুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শরিফ আল রাজি।
টিএইচ