যশোরের অভয়নগর উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি গ্রামে অনলাইন জুয়া খেলা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকে পড়ছে। বিদেশ থেকে পরিচালিত এসব সাইট পরিচালনা করছে বাংলাদেশের এজেন্টরা। নির্জন এলাকায় গড়ে ওঠা ছোট ছোট চায়ের দোকানে বসে অনলাইন জুয়ার আসর। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নেই কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য।
উপজেলার একতারপুর গ্রামের একজন জুয়াড়ি জানান, আমি সিএনজি চালক। লোভে পড়ে ছয় মাস আগে এক বন্ধুর মাধ্যমে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে পরিচয় ঘটে। এরপর একে একে বাড়ির গোয়ালে থাকা চারটি গুরু বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকা খোয়া গেছে। বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে বেঁচে থাকা দুস্কর হয়ে পড়েছে। এখন আমি পুরোপুরি নিঃস্ব।
পায়রাহাট ইউনাইটেড কলেজের একজন শিক্ষার্থী বলেন, বিভিন্ন অযুহাতে বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে অনলাইন জুয়া খেলে সব টাকা নষ্ট করে ফেলেছি। জুয়ার টাকা জোগাড় করতে না পেরে বন্ধুরা পা বাড়াচ্ছে অপরাধ জগতে। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। আমার বন্ধুরা সবাই এখন এই অনলাইন জুয়া খেলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক ও উপজেলার বুইকারা গ্রামের বাসিন্দা জানান, আমার ছেলে প্রথমে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম খেলতো। এখন বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে নিয়মিত জুয়া খেলে। কিছু বলতে গেলে আত্মহত্যার হুমকি দেয়। তিনি জানান, জুয়ায় আর্থিক লেনদেনের সহজ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বাংলাদেশি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস)। এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংকের মাধ্যমে পেমেন্ট করার সুযোগ রয়েছে। ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেও লেনদেন করা যায়।
এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার ওসি এস এম আকিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য নেই। তবে আমি শুনেছি অনলাইন জুয়ার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। আমরা চেষ্টা করছি এজন্টেদেরকে ধরতে। তাদের ধরতে পারলে অনলাইন জুয়ার প্রসার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
টিএইচ