যশোরের অভয়নগরে ১৫০ বিঘা জমিতে ‘তেজ গোল্ড’ নামে ধানের বীজ লাগিয়ে প্রচুর ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। কিন্তু এবার পাকা ধান কাটার আগেই মাজরা পোকার আক্রমণে ধূসর হয়ে গেছে পাকা ধানের ক্ষেত। লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন অসংখ্য কৃষক। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নিকট ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন তারা।
মঙ্গলবার (৭ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পোকার আক্রমণে ধূসর হয়ে গেছে বিঘার পর বিঘা পাকা ধানক্ষেত। ম্লান মুখে ধান ক্ষেতের মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অনেক কৃষক। ক্ষেতের পাশে ২০-৩০ জন কৃষককে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিক প্রস্তুত করছেন কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় সমলয় চাষাবাদ কার্যক্রম শুরু করা হয়। উপজেলার শ্রীধরপুর ইউনিয়নের দিয়াপাড়া গ্রামে শংকরপাশা ব্লকে ৭২ জন কৃষকের ১৫০ বিঘা জমির জন্য সিডলিং ট্রেতে শুষ্ক বীজতলা স্থাপন করা হয়। পরে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ করা হয়। গুটি ইউরিয়া ব্যবহারসহ সুষম মাত্রায় সার দেয়া হয়।
এসময় কৃষক কামাল মোল্যা, সুবহান শেখ, শহিদুল গাজী, গোলাম রসুল মোড়লসহ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলেন, সরকারিভাবে ‘তেজ গোল্ড’ নামে বায়ার ক্রপ সাইন্স কোম্পানির বীজতলা স্থাপন করা হয়। চলতি বছরের শুরুতে মেশিন দিয়ে চারা রোপণ করা হয়। এছাড়া সরকারিভাবে সার ছিটিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ধান পাকতে শুরু করে।
কাটতে এসে দেখি মাজরা পোকার আক্রমণে ধান চিটা হয়ে গেছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তাকে জানানো হয়। তারা আরো বলেন, সরকারি সহযোগিতা ছাড়াও সেচ, কীটনাশক ও পরিচর্যা করার জন্য বিঘা প্রতি আমাদের এক একজনের প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ না পেলে আমাদের চরম ক্ষতি হবে।
শ্রীধরপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, কৃষক পরিবারগুলোর অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি দুঃখজনক। বীজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। এছাড়া জমি ও ক্ষতির পরিমান হিসেবে করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি সহায়তা প্রদান করা খুব জুরুরি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, গত ১০-১২ দিন আগে আমি নিজে এই ব্লক পরিদর্শন করেছি। তখন কোনো সমস্যা চোখে পড়েনি। কৃষকরাও অভিযোগ করেনি। তারা মাজরা পোকার আক্রমণের বিষয়টিও আমাকে বলেনি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েছি। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। আগামীতে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
তবে কি কারণে এমনটি হয়েছে তা খতিয়ে দেখে পরবর্তী করণীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম আবু নওশাদ বলেন, দিয়াপাড়া গ্রামের কৃষকরা আমার অফিসে এসেছিলেন। তাদের অভিযোগ শুনেছি। কৃষি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। আমি নিজেও সেখানে যাব।
টিএইচ
