বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
The Daily Post

অভয়নগরে রাস্তা সংস্কার নিয়ে জনমনে অসন্তোষ

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি

অভয়নগরে রাস্তা সংস্কার নিয়ে জনমনে অসন্তোষ

যশোরের অভয়নগর উপজেলার ভবদহ অধ্যুষিত আন্ধা ডুমুরতলা অঞ্চল। বেশির ভাগ সময় এখানকার রাস্তাঘাট থাকে পানির নিচে নিমজ্জিত। সময়ের সাথে বাড়ছে জনসংখ্যা। প্রতিনিয়ত বাড়ছে পরিবহনের সংখ্যা ও চাহিদার প্রেক্ষিতে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ। 

কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঠিক পরিকল্পনার অভাবে যাচ্ছেতাই কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এভাবে কাজ করলে উপজেলার আন্ধা টু ডুমুরতলার সবচেয়ে ব্যস্ততম সড়কটি টেকসই হবে না বলে এলাকাবাসীর ক্ষোভ স্বয়ং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলাধীন কেডিএ আর আইপিএম ৪১ প্রকল্পের আওতায় তালতলা থেকে ডুমুরতলা পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের দায়িত্ব পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ওয়াই এ খান। যার বাস্তবায়নের ব্যয়ভার ধরা হয়েছে ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। 

কিন্তু তালতলা থেকে আন্ধা পর্যন্ত রাস্তাটির সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। বাকি আন্ধা থেকে ডুমুরতলার পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তাটি বেশির ভাগ সময় পানিতে থাকে নিমজ্জিত। এমন অবস্থায় রাস্তাটি আগের মতো করা হলে বেশিদিন টেকসই হবে না। এতে সরকারের শুধু অর্থই অপচয় হবে জনগণের কোনো উপকারে আসবে না। তাদের দাবি—  রাস্তাটি  নতুন পরিকল্পনা করে দুই পাশে প্যালাসাডিং দিয়ে উঁচু করতে হবে। সেই সাথে রাস্তাটি তিন ফুট উঁচু করতে হবে। তাহলে এলাকাবাসীর সমস্যার সমাধান হবে। 

ডুমুরতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র আকাশ বলেন, বর্ষার সময় এই রাস্তা দিয়ে আমরা স্কুলে যেতে পারি না। রাস্তাটি ভালোভাবে করলে আমরা স্কুলে যেতে পারব। ভ্যান চালক শিবপদ বলেন, এই রাস্তা দিয়ে বছরে ৬ মাস চলাচল করা যায়। বাকি সময় রাস্তায় জল থাকে। তাই রাস্তা উঁচু করে করলে আমাদের গাড়ি চালাতে সুবিধা হয়। 

স্থানীয় বাসিন্দা রনজিৎ মল্লিক বলেন, এই রাস্তাটি বছরের অর্ধেক সময় থাকে পানির নিচে। অনেক বছর পর রাস্তাটি সংস্কারে কাজ শুরু হয়েছে। অথচ সঠিক পরিকল্পনা না করে দায়সারাভাবে কাজ করে চলে যাচ্ছে। এতে আমাদের কোনো কাজে আসবে না। তিনি বলেন, রাস্তার দুপাশে গাইডওয়াল দিয়ে তিন থেকে চারম ফুট উঁচু না করলে রাস্তাটি এক বছরও টিকবে না।

চলিশিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সানা আব্দুল মান্নান বলেন, আন্ধা টু ডুমুরতলা রাস্তাটি প্রায় ছয় মাসের মতো পানিতে নিমজ্জিত থাকে। ফলে রাস্তার এই অংশটুকু গাইড ওয়াল দিয়ে উঁচু করে তৈরি না করলে বেশিদিন টেকসই হবে না।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের দায়িত্বে থাকা আমির হোসেন মিন্টু বলেন, আমরা সরকারি সিডিউল অনুপাতে কাজ করছি। তবে তিনি স্বীকার করেন এভাবে কাজ করলে রাস্তার স্থায়িত্ব বেশি দিন থাকবে না। নতুন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে অবশিষ্ট দেড় কি.মি. বেশি রাস্তাটি সংস্কার করলে ভালো হতো।

অভয়নগর উপজেলা প্রকৌশলী এস এম ইয়াফির কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আন্ধা টু ডুমুরতলা রাস্তার বিষয়ে স্থানীয় জনগণের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।  

এ ব্যাপারে এলজিইডির যশোর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুল ইসলাম জানান, আমি রাস্তাটি পরিদর্শন করেছি। এই বাজেটে রাস্তা উঁচু করার কোনো সুযোগ নেই। পরবর্তীতে নতুন বাজেট আসলে বিষয়টি ভেবে দেখব।

টিএইচ