শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post
ভয়াল ২৫ মে

আইলার ১৪ বছর পার হলেও টেকসই বেড়িবাধ নির্মাণ হয়নি

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি 

আইলার ১৪ বছর পার হলেও টেকসই বেড়িবাধ নির্মাণ হয়নি

গতকাল ভয়াল ২৫ মে। ২০০৯ সালের এ দিনে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের সুন্দরবন উপকূলীয় জনপদে প্রবল বেগে আঘাত হানে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আইলা। ভয়াবহ জলোচ্ছাসে মুহুর্তের মধ্যে ভাসিয়ে নিয়ে যায় অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি, গবাদিপশু ও সহায় সম্পদ। 

আইলার জলোচ্ছাসে খুলনার কয়রায় হরিণখোলা, ঘাটাখালি, মঠবাড়ি, পাথরখালি, গাজীপাড়া, হাজতখালি, পদ্মপুকুর, হারেজখালি, গোলখালি, শিকারীবাড়ি, দশালিয়া, পাইকগাছার সোলাদানা, দাকোপের নলিয়ান, সুতারখালি, গুনারি, কালাবাগি, সাতক্ষীরার বুড়িগোয়ালিনী, গাবুরা, লেবুবুনি, পারশেমারি, আড়পাঙ্গাসিয়া, প্রতাপনগর, কুড়িকাহুনিয়া, চাকলা. বরগুনার পাথরঘাটা, বাগেরহাটের রামপালসহ অন্যত্র পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে গোটা দক্ষিণ জনপদ লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। 

প্রচন্ড ঝড় ও জলোচ্ছাসের কবলে পড়ে শিশুসহ ৪০ জন নারী পুরুষ প্রাণ হারায়। জলোচ্ছাসে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধগুলো ৩ বছর যাবত মেরামত করা সম্ভব না হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। 

কয়রার মঠবাড়ি, শিকারীবাড়ি, হারেজখালি, পাথরখালি, দাকোপের নলিয়ান, গুনারি, শ্যামনগরের গাবুরা, বুড়িগোয়ালিনী, আশাশুনির প্রতাপনগর, চাকলা, কুড়িকাহুনিয়া বেড়িবাঁধ একটানা তিন বছরের বেশি সময় অরক্ষিত থাকায় অভ্যন্তরীন রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ফসলি জমি জায়গা, ক্ষেতখামার দীর্ঘদিন লোনা পানিতে তলিয়ে থাকায় এলাকার মানুষ সর্বশান্ত হয়েছিল। অসহায় লোকজনের খাবার ও ত্রাণের জন্য চারিদিকে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়।

লোনাপানির জোয়ারভাটায় গাছগাছালি মরে এলাকা মরুভূমির আকার ধারণ করেছিল। ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলা আঘাত হানার পরপরই সরকারের একাধিক মন্ত্রী এমপি অনেকবার কয়রায় এসে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও আজো পাউবোর ১৪/১, ১৪/২ পোল্ডারের সিংহভাগ বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হয়নি। 

এখানকার বেশিরভাগ বেড়িবাঁধ দুর্বল, ক্ষয়িষ্ণু ও নাজুক অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ২০২০ ও ২০২১ সালে আবারো সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও ইয়াসের তাণ্ডবে কপোতাক্ষ নদ সংলগ্ন দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে পুনরায় লোনা পানিতে কয়রা এলাকা প্লাবিত হয়। 

বর্তমানে কয়রা জনপদের মানুষের সরকারের কাছে একটাই দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ। ১৪ বছর আগের সে দিনের আইলার তাণ্ডবের কথা মনে উঠলে আজো উপকূলের মানুষ কেঁদে উঠে। 

টিএইচ