ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে যুববিষয়ক সম্পাদক পদ পেলেন মাদক ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেন।
গত ১৪ জানুয়ারি দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হওয়া কমিটির তালিকা থেকে জানা গেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান ও সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম সিরাজ স্বাক্ষরিত আখাউড়া উপজেলা বিএনপির ১০১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
ওই কমিটিতে জাকির হোসেনকে যুববিষয়ক সম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে। জাকির হোসেন উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের নূরপুর মধ্যপাড়ার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কমিটি প্রচার হওয়ার পর কমিটিতে পদ পাওয়া কতিপয় ব্যক্তি নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সমালোচনা চলছে। কিন্তু রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের কথা ভেবে প্রকাশ্যে কথা বলতে চাচ্ছে না কেউ।
আখাউড়া থানা ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১১ অক্টোবর ২০২২ আখাউড়া উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংগ্যজাই মারমার নেতৃত্বে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও থানার পুলিশ সদস্য সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স টিম মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে নূরপুর মধ্যপাড়া মো. জাকির হোসেনের বসতঘর তল্লাশি করে ১ হাজার পিস ইয়াবাসহ জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে, যার আনুমানিক মূল্য ৫ লাখ টাকা। এ সময় মাদকদ্রব্য বিক্রির ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা উদ্ধারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে টাস্কফোর্স। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে তাদের আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।
স্থানীয় লোকজন, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর সাথে কথা বললে মাদক ব্যবসার সাথে জাকির হোসেনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি তারা প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন।
মাদক ব্যবসায়ীকে আখাউড়া উপজেলা বিএনপির কমিটিতে পদ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান জানান, জাকির হোসেনকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চিনেন না। আখাউড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সেক্রেটারির সাথে আলাপ করার পরামর্শ দেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম সিরাজকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন আব্দু ও সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলমকে ফোন দিতে বলেন।
আখাউড়া উপজেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন আব্দু জানান, ‘জাকিরকে চিনি তো। সে মুশফিকুর-নাছির উদ্দিন হাজারী গ্রুপে দল করত। আসলে ঘটনা যেটা বলছেন এটা দুঃখজনক। কিন্তু এইটা তো হইয়া গেছে। আমরা তাড়াহুড়ো করে কমিটি করতে গিয়ে ইয়া (ভুল) হইছে। এটা যেকোনোভাবে এফসেন্ট মাইন্ডে হয়ে গেছে।
সে বিভিন্ন ব্যবসা বাণিজ্যের সাথে জড়িত হয়ে গেছে। আমারও এটা খারাপ লাগছে। সে মাদক ব্যবসায়ী, ইয়াবা ব্যবসায়ী, কী বলব বলো। ডা. খোরশেদের বক্তব্য নিলে জিনিসটা ক্লিয়ার হয়ে যাবে।’
আখাউড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. খোরশেদ আলম ভূঁইয়া বলেন, ‘এটা (মাদক ব্যবসায় জড়িত) আমার নলেজে ছিল না, এটা আমি জানি না। মাদক ব্যবসায়ীকে আমরা ঘৃণা করি। তার (জাকির) ভাষ্যমতে জানতে পারছি সে (জাকির) নাকি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে।’
এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য জাকির হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও বক্তব্য নেয়া যায়নি।
টিএইচ