বগুড়া জেলার আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া ও নন্দী গ্রাম এই তিন উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত হওয়া এক সময়ের প্রমত্তা নাগর নদ বর্তমানে সরু খালে পরিণত হয়েছে। প্রায় একশ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ঐতিহাসিক এই নাগর নদের তলা ভরাট হয়ে মাঝে মাঝে চর পড়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চর পড়া ও ভরাট অংশে নানা রকম সবজি চাষ করছে নদের দুই পাড়ের প্রান্তিক চাষিরা। খনন না করা ও নিয়ম না মেনে বালু উত্তোলন করা এবং মাটি দস্যুদের কারণে এমন অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নদের দুই পাড়ের বাসিন্দারা।
খনন না করায় নদের তলদেশ ভরাট হয়ে চর পড়ায় বর্ষা মৌসুমে পানির ধারণ ক্ষমতা কমে গিয়ে উপচে উঠে। ফলে নদের দুই পাড়ের বাসিন্দারা পড়ে চরম ঝুঁকির মধ্যে। একই কারণে শুকনা মৌসুমে পানি না থাকায় নদের দুই পাড়ের ফসলি জমিতে সেচের পানি পায়না কৃষকরা।
কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরর স্মৃতি বিজড়িত এই নাগর নদ এক সময় সারা বছর টইটম্বুর থাকতো পানিতে। সহজে মিলতো সেচের পানি। প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেতো ছোটো-বড়ো নানা জাতের মাছ। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় নাগর নদ দিয়ে সর্বদা বজরায় চেপে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাদের পৈতৃক জমিদারি দেখভাল করার জন্য মাঝে মধ্যে পতিসর কুঠি বা কাছারি বাড়িতে যাতায়াত করতেন।
পতিসর কাছারি বাড়ি নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলায় অবস্থিত যা বর্তমানে একটি পর্যটন কেন্দ্র। বাংলা সনের পঁচিশে বৈশাখ তাঁর জন্ম বার্ষিকীতে প্রতি বছর সেখানে সরকারিভাবে পালন করা হয় নানান কর্মসূচি ও রবীন্দ্র মেলা।
তিন উপজলার সীমানা দিয়ে প্রবাহিত নাগর নদের দুই পাড়ের গ্রামগুলার বাসিন্দাদের দাবি নদটি অতিদ্রুত খনন করে নদসহ তাদের উদ্ধারের। এতে করে বর্ষা মৌসুমে যেমন ঝুঁকিমুক্ত হওয়া যাবে তেমনভাবে শুকনা মৌসুমে পানি ধরে রাখা গেলে সেচ কাজ সহজ হবে আর সেই সাথে মিলবে দেশি ছোটো বড়ো নানা জাতের মাছ।
টিএইচ