বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

ইউএনওদের কাঁধে দায়িত্বের পাহাড়!

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

ইউএনওদের কাঁধে দায়িত্বের পাহাড়!

৫ আগস্টের বিপ্লবের পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার কয়েকদিনের মাথায়ই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করে। তারপরই অব্যাহতি দেয়া হয় পৌর মেয়র এবং কাউন্সিলরদের। বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি।

যার ফলে উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এসে পড়ে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত ইউএনওদের কাঁধে। সরকার পতনের পর থেকে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্যও মানুষ সবার আগে ছুটছেন ইউএনওদের কাছে। 

এখন যেন জনসাধারণের ভরসাস্থল হয়ে উঠেছেন উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা ইউএনওরা। আইনের মধ্যে থেকেই ইউএনওরা স্ব-স্ব এলাকার জনগণের সেবায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। 

এছাড়াও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কয়েকটি কমিটিতে উপদেষ্টা এবং ৮ থেকে ১০টি কমিটির সভাপতির দায়িত্বে থাকেন স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়ররা। তবে তারা না থাকায় সব কমিটিসহ ১৮০ পদের দায়িত্ব এখন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ইউএনওর মো. এমরান খানের কাঁধে।

তার কাঁধেও বর্তমানে উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং দুই ইউনিয়ন পরিষদসহ উপজেলার অন্তত অর্ধশত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব। এছাড়া গণশুনানি, বিভিন্ন বিরোধ মীমাংসা, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং মা-বাবার ভরণপোষণ নিশ্চিতকরণসহ প্রতিদিন নানাবিধ সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন তিনি।

অন্যদিকে, বর্তমানে মা ইলিশ রক্ষায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নেও নিয়মিত রাতভর অভিযান পরিচালন করছেন ইউএনও। এমন কর্মতৎপরতা দেখলে মনে হবে যেন তার কোনো ক্লান্তি নেই, নির্বিঘ্নে সুন্দরভাবে ইউএনও মো. এমরান খান তার প্রতিটি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা কমিটি থেকে শুরু করে শিক্ষা, কৃষি উন্নয়ন, প্রতিবন্ধী ভাতা, হাটবাজার ব্যবস্থাপনা, বয়স্ক-বিধবা ও অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি, মাতৃত্ব ভাতা, চোরাচালান প্রতিরোধ, এনজিও সমন্বয়, টেন্ডার, টিআর-কাবিটা, বিভিন্ন দিবস উদ্যাপন, বিডব্লিউবিসহ উপজেলা পর্যায়ে সরকারি দপ্তরগুলোর বিভিন্ন কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ইউএনও। এখন সমন্বয় সভাও পরিচালনা করতে হচ্ছে। সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্বও তার কাঁধে।

রায়পুর এলএম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, একজন ইউএনও উপজেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তাকে এত চাপের মধ্যে রাখা মোটেও ঠিক না। তবে অনেক চাপ থাকা শর্তেও আমাদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সব কাজই খুব আন্তরিকতার সঙ্গে করেন। 

রায়পুর পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি অ্যাড. কামাল উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা তার কাছে গেলে তিনি অত্যন্ত সুন্দরভাবে নানা পরামর্শ দেন। 

ইউএনও মো. এমরান খান বলেন, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডাররা সর্বদা সরকার ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ এবং সেবা প্রদানের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। সরকার পরিবর্তনের পর আগের চেয়ে দায়িত্ব অনেক বেড়েছে। তবে এটিকে আমি চাপ বা বোঝা মনে না করে সরকারের বিভিন্ন স্তরের জনগণকে সেবা দেয়ার বাড়তি সুযোগ বলে মনে করছি। এই সময়ের কাজগুলো আমার কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে। যা ভবিষ্যতে আমার নিজের কাজে সহযোগী হবে বলেও আমি আশাবাদী। 

টিএইচ