অপরিপক্ক আম পাড়ার কারণে গত কয়েক বছর থেকে বিভিন্ন জাতের আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দিচ্ছেন জেলা প্রশাসক। গত বুধবার একটি মিটিংয়ের মাধ্যমে চলতি বছর আম পাড়ার নতুন সময় নির্ধারণ করা হয়। এদিক থেকে ৪মে বৃহস্পতিবার থেকে গুটি জাতের আম পাড়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এ সিদ্ধান্তের প্রথম দিনে আমের রাজধানী রাজশাহীর বাঘা উপজেলা থেকে ৪৪০ কেজি আম রপ্তানি করা হয়েছে হংকং ও ইতালিতে।
বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, রাজশাহীকে আমের জন্য বিখ্যাত বলা হলেও আম প্রধান অঞ্চল হিসাবে খ্যাত জেলার বাঘা উপজেলা। রাজশাহী জেলার নয়টি উপজেলার মধ্যে আট টিতে যে পরিমান আম উৎপাদন হয়, তার চেয়েও বেশি আম উৎপাদন হয় বাঘা উপজেলায়। এছাড়াও এখানকার আম অনেক সুমিষ্ট।
এ কারণে রাজশাহীর মানুষ বাঘাকে আমের রাজধানী বলে থাকেন। তিনি বলেন, প্রায় ৮-১০ বছর থেকে এ উপজেলার আম রপ্তানি হচ্ছে দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে। গত বছর ইতালি, হংকং, নেদারল্যান্ড, থাইল্যান্ড ও রাশিয়াসহ বেশ কিছু দেশে এ উপজেলার আম রপ্তানি করা হয়।
ঠিক একই ধারাবাহিকতায় এ বছর জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা পাওয়ার পরদিন গত বৃহস্পতিবার বাঘার আড়পাড়া এলাকার একটি আম বাগান থেকে আম নামিয়ে প্যাকেজিং করে ঢাকার আদব ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৪৪০ কেজি গুটি (চরুসা) আম রপ্তানি করা হয় ইতালি এবং হংকং-এ। এ ছাড়াও ঢাকার সুনামখ্যাত সুপার শপ ইউনিমার্ট এ যাচ্ছে আরো একশ কেজি আম।
বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের আম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সাদিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক শফিকুল ইসলাম ছানা বলেন, গুটি প্রজাতির আমের এই প্রথম চালান যাচ্ছে হংকং ও ইতালিতে। এটি আগাম জাতের আম। খেতেও খুব ভালো এবং সু-স্বাদু।
এ আম স্থানীয় পর্যায় চাহিদা অনেক বেশি। তবে সিজিনের প্রথম দিন ৩০০ কেজি ইতালি এবং ৭০ কেজি পাকা ও ৭০ কেজি কাঁচা আম হংকংয়ে রপ্তানি করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আড়পাড়া গ্রামের কৃষক মো. মকুল হোসেন ও জিন্নাত আলীর বাগান কিনে আমের পরিচর্যা করছেন বাঘার লিড ফার্মার শফিকুল ইসলাম ছানা।
তিনি উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহকে সাথে করে বৃহস্পতিবার সকালে বাগানে এসে আম পাড়ার উদ্বোধন করেন। এ উপজেলা থেকে বিদেশে যে সকল আম রপ্তানি করা হয় তার মধ্যে গুটি, হিমসাগর(খিরসাপাত), ল্যাংড়া, আম্রপালি ও ফজলি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বর্তমানে রাজধানী ঢাকা, সিলেট, ভৈরম, নরসিংদি, ময়মনসিংহ ও বরিশালসহ দেশের অভ্যান্তরে যে সকল জায়গায় আম আমদানি করা হয় তার মধ্যে বাঘার আম অন্য যে কোন এলাকার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয় বলে জানান এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা।
টিএইচ