রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নজরকাড়া উন্নয়নে পাল্টে যেতে শুরু করেছে গ্রামীণ জনপদের চিত্র। এসব উন্নয়নে পাল্টে গেছে গ্রামীণ জনপদের জীবনযাত্রার মান। রাস্থাঘাট, সেতু, কালভার্ট, স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন অবকাঠামো খাতে উন্নয়নে পাল্টে গেছে গ্রামের চিত্র।
একসময় খানাখন্দের কাদামাটির সড়কে এখন পিচঢালা পাকা রস্তায় মিশেছে গ্রামের পর গ্রামে। অন্যদিকে আশ্রয়ণের ঘর, বিদ্যুৎ, সামাজিক নিরাপত্তাসহ সার্বিক উন্নয়নের সুফল পেয়ে খুশি এলাকাবাসীও। একসময় অবহেলিত এ জনপদের যোগাযোগের ভরসা ছিল ট্রেন আর ভাঙ্গুর রাস্তা। বহুকষ্টে যাতায়াত করত সাধারণ মানুষ।
বর্তমান সময়ে শেখ হাসিনা সরকারের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে বদলে গেছে মানুষের জীবনযাত্রার মান। সারা দেশের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থায় দোয়ার খুলেছে সড়ক পথে আধুনিক যাতায়াত ব্যবস্থার নব দিগন্তের।
এসব উন্নয়নের পাশাপাশি চলছে বাংলাদেশ সরকারের ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যাগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্টের (ইফাদ) প্রকল্পের কাজ। ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যাগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট সহায়তাপুষ্ট প্রভাতী প্রকল্পের মাধ্যমে এরই মধ্যে প্রায় দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্কুল কাম ফ্লাট সেন্টার নির্মাণ ও কয়েকটি হাটের শেটঘড় নির্মাণ।
প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পে মধ্যমে ৭৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সম্প্রসারণের কাজ করা করেছে। পাশাপাশি প্রশাসনিক কার্যক্রমকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এলজিইডির মাধ্যমে একটি উপজেলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ, দুস্থ ও অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বাড়ি নির্মাণ, মুক্তিযোদ্ধদের স্মরণে রংপুর কুড়িগ্রাম মহাসড়কের পশে চেতনা ৭১ নির্মাণ ও শহীদবাগে বদ্ধভূমি নির্মাণ, ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ করা হয়েছে।
গ্রামীণ জনপদের যোগাযোগকে সহজীকরণ করতে ইতোমধ্যেই ৮৮ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক উন্নয়ন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ চলমান রয়েছে।
এ ছাড়া গ্রামীণ হাটবাজার উন্নয়ন, বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, গ্রামীণ হাটবাজারে নারীদের জন্য মার্কেট সেকশন নির্মাণসহ সড়ক ও বাজার উন্নয়নে চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক দলের (এলসিএস) সদস্যদের আয়বর্ধক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে এলসিএস প্রকল্পে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সড়ক, সেতু, কালভার্ট ও স্কুলের ভবন নির্মাণ হওয়ায় সড়ক যোগাযোগে স্বচ্ছলতার পাশাপাশি শিক্ষা ক্ষেত্রে হয়েছে কল্পনাতীত উন্নয়ন যা এখনো চলমান রয়েছে। উপজেলার শশ্যভান্ডার ক্ষ্যাত শহীদবাগ ইউনিয়নের কৃষক মো. আব্দুর রফিক জানান ধানসহ বিভিন্ন খাদ্য শস্য আবাদ করেন।
এসব শস্য স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতেন। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় ভালো দাম পেতেন না। এখন তিনি উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারসহ ঢাকায় নিয়ে খাদ্য শস্য বিক্রি করছেন। এতে দাম ভালো পাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন এলা হামার দিন পাল্টি গেছে। হারাগাছের বাসিন্দা জামিনুর রহমান জানান আগে হারাগাছ থেকে কাউনিয়া যাইতে মেলা সময় লাগছিলো কিন্তু এলা সইগ রাস্তা পাকা হওয়াতে অল্পো সময়ের মধ্যেই হামরা কাউনিয়া যাওয়ার পাই।
কাউনিয়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান জেমী বলেন, ইতোমধ্যেই এলজিইডির তথ্যাবধানে কাউনিয়া উজেলায় প্রায় ২০ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পের ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নতুন করে কিছু কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। এসব কাজ সম্পন্ন হলে গ্রামীণ জীবনযাত্রার চলমান ধারা আরও গতিশীল হবে।
টিএইচ