শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

কাজ শেষ না হতেই যমুনায় ধসে পড়লো মুজিব কিল্লা

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি    

কাজ শেষ না হতেই যমুনায় ধসে পড়লো মুজিব কিল্লা

সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে চরাঞ্চলের মানুষের জানমাল রক্ষায় ‘মুজিব কিল্লা’ তৈরি করছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। এটি উপজেলার চর গিরিশ ইউনিয়নের ছালাল ও চর ডগলাস মৌজার মাঝখানে নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই যমুনা নদীর পানির তোড়ে ধসে পড়েছে এ মুজিব কিল্লার একাংশ।

জানা যায়, দুই কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে এ মুজিব কিল্লা। ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর স্থানীয় এমপি প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয় এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। চলতি জুলাই মাসেই নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। কাজটি বাস্তবায়ন করছে সজীব কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ৫ জুলাই যমুনার পানিতে একাংশ ভেঙে পড়ে। আশঙ্কা রয়েছে যমুনার পানি বাড়লে এটি পুরোপুরি বিলীন হয়ে যাবে।

স্থানীয়রা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে আমাদের জানমাল রক্ষায় নির্মিত এই মুজিব কিল্লা আদৌ টিকবে কি না তা নিয়ে আমরা সংশয়ে রয়েছি। কারণ কাজ শেষ না হতেইতো ভেঙে গেলো।

ভাঙনের কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, এলাকার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র সেতুর মুখ বন্ধ করে দেয়ায় যমুনা নদীর পানির বেগ বেড়ে যায়। এতে স্থানীয় একটি রাস্তা ভেঙে যায়। আর নতুন মাটির ওপরে নির্মিত স্থাপনাটির নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় মুজিব কিল্লার একাংশ ভেঙে পড়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্র জানায়, এটি বি-টাইপের স্থাপনা। আয়তন ৯ হাজার ৩০০ বর্গফুট। প্রকল্পের নাম ‘মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’। উদ্দেশ্য, দুর্যোগকবলিত এলাকার জনসাধারণ ও তাদের পরিবারের জীবনরক্ষা, মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী নিরাপদে সংরক্ষণ এবং দুর্যোগে আক্রান্ত গৃহপালিত প্রাণির নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করা। স্বাভাবিক সময়ে এর বহুমুখী ব্যবহার করা যাবে। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, খেলার মাঠ ও হাটবাজার হিসেবে ব্যবহার করা, কমিউনিটির উন্নয়নের লক্ষ্যে বৈঠক-সভার আয়োজন করা, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের স্থান ও অস্থায়ী সেবাকেন্দ্র হিসেবে এটি ব্যবহারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

মুজিব কিল্লার প্রকল্প পরিচালক মনোয়ার হোসেন বলেন, কিল্লাটি সেখানে টিকবে কি না তা যাচাই করার জন্য তিন সদস্যের একটি কারিগরি কমিটি এরইমধ্যে গঠন করা হয়েছে। আগামী মাসের শুরুতেই ওই কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তবে তিনি মনে করেন, সেতু বন্ধ করে দেয়ার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। আর একেবারে নতুন মাটির ওপরে কিল্লা নির্মাণ ও যমুনার পানির স্রোতে কিছুটা ভেঙে গেছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী রিপন মিয়া বলেন, মূল মাটির এক ফুট নিচ থেকেই পিলার তুলেছেন। কিন্তু পানির প্রবল স্রোতের কারণে মূল মাটি সরে যাওয়ায় ভেঙে গেছে। তারা ৮০ শতাংশেরও বেশি কাজ শেষ করেছেন।

কাজীপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একেএম শাহ আলম মোল্লা বলেন, প্রকল্প পরিচালক এটি পরিদর্শন করে কমিটি গঠন করেছেন। এ কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

টিএইচ