দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর পাড়া-মহল্লায় বিরাজ করছে উৎসবমুখব পরিবেশ। চলছে বিরামহীন প্রচারণা। ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট ও দোয়া চাইতে দেখা গেছে কিশোরগঞ্জের বিভিন্ন আসনের প্রার্থীদের। ভোটারদের মন জয় করতে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। তাই প্রচার-প্রচাণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হোক- এ প্রত্যাশা ভোটারদের। প্রচারণা চালানো প্রার্থীরা বলছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে যাবেন এবং ভোট দেবেন। সবাইকে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বানও জানান তারা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, নির্বাচনে যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিশোরগঞ্জ -১ আসনে জমে উঠেছে ভাইবোনের লড়াই। এ আসনে আ.লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন তারই আপন ভাই মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়াতুল ইসলাম। এছাড়াও এ আসনে জাতীয় পাটির লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. আব্দুল হাই।
কিশোরগঞ্জ -২ আসনে ত্রিমুখী লড়াই হবে এবার। এ আসনের বর্তমান এমপি সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদকে হটিয়ে আ.লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ। তবে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন সাবেক এমপি পাকুন্দিয়া উপজেলা আ.লীগের আহ্বায়ক অ্যাড. সোহরাব উদ্দিন ও বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সাবেক এমপি মেজর (অব.) আক্তারুজ্জামান রঞ্জন।
ইতোমধ্যে বর্তমান এমপি সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সাবেক এমপি আক্তারুজ্জামান রঞ্জনকে সমর্থন দিয়েছেন। তাই এ আসনে ত্রিমুখী হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রার্থীরাও নিয়মিত গণসংযোগ করছেন দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি।
কিশোরগঞ্জ -৩ আসনে আ.লীগের মনোনয়ন পেয়েও দলের সিদ্ধান্তে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন সদ্য পদত্যাগ করা করিমগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসিরুল ইসলাম খান আওলাদ। এ আসনে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন। আসনটিকে তাকে ছেড়ে দিতেই আ.লীগ প্রার্থীর প্রার্থীতা প্রত্যাহার করানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ছাড়াও এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকলীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার গোলাম কবির ভূইয়া, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এডিসি মেজর (অব.) নাসিমুল হক ও নিউইয়র্ক আ.লীগ নেতা মাহফুজুল হক হায়দার।
এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বসে নেই। তারা প্রতিনিয়ত জনগণের কাছে যাচ্ছেন। ভোট ও দোয়া চাইছেন।
কিশোরগঞ্জ -৪ আসনে অনেকটাই নির্ভর সাবেক রাষ্ট্রপতি পূত্র তিনবারের এমপি রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। কারন এ আসনে তার কোন শক্তিশালী প্রতিপক্ষ নেই। তাই তার বিজয় অনেকটাই সহজ হবে বলে মনে করছে নেতাকর্মীরা। তবুও এমপি তৌফিক বসে থাকতে রাজি নয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ভোট প্রার্থনা করছেন। আধুনিক হাওরকে স্মার্ট হাওরে রুপান্তরের নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
কিশোরগঞ্জ -৫ আসনে এবারো নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি আফজাল হোসেন। তবে তার মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল সিআইপি।
সুব্রত পাল গত এক বছরে নিকলী বাজিতপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে গিয়ে সরকারের উন্নয়নমূলক ব্যাপক প্রচারণা করেছেন। তাছাড়া আ.লীগের অধিকাংশ নেতাকর্মী তার সঙ্গে রয়েছে। নৌকার প্রার্থী এমপি আফজাল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সুব্রত পাল নিয়মিত গণসংযোগ ও ভোট প্রার্থনা করছেন।
কিশোরগঞ্জ -৬ আসনে অনেকটাই নির্ভার বর্তমান এমপি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। কারন এ আসনে তার কোন শক্তিশালী প্রতিপক্ষ নেই। তাই তার বিজয় অনেকটাই সহজ হবে বলে মনে করছে নেতাকর্মীরা। তবুও তিনি নিয়মিত দলীয় নেতাকর্মী সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ও ভোট প্রার্থনা করছেন।
টিএইচ