জেলার কুমারখালী উপজেলার গড়াই নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু ডাইং কারখানা। এ সমস্ত ডাইং কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ ফেলা হচ্ছে গড়াই নদীতে, ফলে দূষিত হচ্ছে গড়াই নদীর পানি। পাশাপাশি এ সমস্ত কারখানাগুলোর সৃষ্ট কালো ধোয়ায় দূষিত করছে বাতাস।
গড়াই নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এ সমস্ত ডাইং কারখানায় ব্যাবহার করা হচ্ছে ক্ষতিকর সালফিউরিক অ্যাসিড, এসিটিক এসিড, কষ্টিক সোডা, ব্লি¬সিং পাউডার, ক্ষতিকর ফিরোজা রংসহ আরো বেশ কিছু রাসায়নিক পদার্থ। সুতা প্রসেসিং শেষে এ সমস্ত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত বর্জ্য গড়াই নদীতে ফেলে দুষিত করছে নদীর পানি। অথচ এই গড়াই নদীর পানি প্রতিদিন অসংখ্যা মানুষ গোসল, কৃষি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পাশাপশি অনেকে রান্না ও গৃহস্থালির কাজেও ব্যাবহার করছেন।
বিগত দিনে বিভিন্ন সময় পরিবেশ বিষয়ক সভা-সেমিনারে ডাইং মালিকদের সাথে সচেতন মহলের মতবিনিময়কালে বড় গর্ত করে হাউজ বানিয়ে তার মধ্যে ডাইংয়ের বিষাক্ত বর্জ্য মিশ্রিত পানি ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত কোন ডাইং মালিক সে পরামর্শনুযায়ী হাউজ তৈরি করে নাই।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ডাইং মালিক বলেন, হাউজ বানানো সময় সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল তাই ডাইংয়ের বিষাক্ত বর্জ্য নদীতেই ফেলছি।
নদীর পানি ব্যাবহারকারী কয়েকজন বলেন, নদীতে গোসলের ফলে গায়ে চুলকানি দেখা দিচ্ছে এবং রান্নার কাজে ব্যবহার করায় নানা রকম পেটের অসুখ দেখা দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার বলেন, ডাইং কারখানাগুলোতে যে সমস্ত রাসায়নিক পদার্থ ব্যাবহার হয় তা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এই পানিতে নিয়মিত গোসল করার ফলে চুলকানিসহ নানা প্রকার চর্মরোগ দেখা দিবে। রান্নার কাজে নিয়মিত এ পানি ব্যবহার করলে গ্যাস্টিক, লিভারে নানা রকম সমস্যা, কিডনির সমস্যা এমনকি রক্ত তৈরিতেও নানা রকম জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ডাইং মালিকেরা বড় গর্ত করে হাউজ বানিয়ে সেখানে ডাইংয়ের বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ রাখবে এমনটাই প্রত্যাশা করছে স্থানীয় সচেতন মহল।
এবিষয়ে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল জানান, আমরা ইতোমধ্যেই পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে কথা বলেছি যেন পরিবেশেরও ক্ষতি না হয় এবং শিল্পেরও ক্ষতি না হয় সেদিক চিন্তা করে ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি আমরাও কাজ করে যাচ্ছি।
টিএইচ