সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে কুষ্টিয়ায় বোর মৌসুমে চাল সরবরাহ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত ৫ হাজার ১৯০ টন চাল বরাদ্দ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ করেছে চাল কল মালিকরা।
মোটা অংকের আর্থিক সুবিধা নিয়ে সরকার দলীয় এক নেতা, ভাইসহ অনুসারীদের ৯টি চালকলের মালিকের নামে অবৈধভাবে ৫ হাজার ১৯০ টন চাল বরাদ্দ দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের পর অভিযোগ দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না বলে জানান বঞ্চিত চালকল মালিকরা।
কুষ্টিয়ার চালকল মালিকরা বলেন, এবার নিম্নমানের চাল কেনা, মিল থেকে চাল গুদামে আনলোড হয়ে সরাসরি খুলনার গুদামে পাঠানোসহ অতিরিক্ত বরাদ্দে নয়ছয় নানা অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সমাধানের জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছে মিল মালিক সমিতি।
কুষ্টিয়া জেলায় এবছর বোর মৌসুমে খাদ্যবিভাগ মিল মালিকদের কাছ থেকে ৩৮ হাজার টন চাল কেনার চুক্তি করে ১৮৫ জন মিল মালিকের সাথে। ৭ জুন থেকে চাল কেনা শুর হয়। প্রতি কেজি চাল ৪৪ টাকা দরে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই চাল কেনা চলবে।
জানা গেছে, প্রথম পর্যায় বরাদ্দ আসা ৩৮ হাজার টন চাল ১৮৫জন মিল মালিকের মধ্যে বিভাজন করা হয়। এরপর যেসব মিল মালিকেরা প্রথম পর্যায় চাল সরবরাহ শেষ করেন তারা ২য় পর্যায়ে অতিরিক্ত চাল বরাদ্দের জন্য আবেদন করে। আবেদনগুলো আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা খুলনার অফিসে পাঠানো হয়। ২৮জন মিল মালিক আবেদন করলেও সেখানে খুলনা থেকে ৯ জন মিল মালিকের নামে ৫ হাজার ১৯০ টন চাল বরাদ্দ দিয়ে চিঠি ইস্যু করা হয়।
মিল মালিকদের অভিযোগ, সদর উপজেলা আ.লীগের ও মিল মালিক সমিতির একাংশের নেতা প্রভাব খাটিয়ে তার এবং তার ভাইদের নামে ৯টি মিলের অনুকূলে বরাদ্দ করিয়ে নিয়েছে। যা খাদ্য সংগ্রহ নীতিমালার পরিপন্থি।
যে নয় চালকল বরাদ্দ পেয়েছে তারা হলেন, ফ্রেশ অ্যাগ্রো লিমিটেড, ওয়াদি অটো রাইচ মিল, শামীম অ্যাগ্রো ফুড, প্রভাতি অ্যাগ্রো ফুড প্রোডাক্টস, সূবর্ণা অটো ফুড-১, মা ভান্ডারী অটো রাইচ মিল, গুরুরদান অ্যাগ্রো ফুড ও তারিয়া অটোরাইচ মিল।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন বলেন, এবারে সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ নিয়ে মিল মালিকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। অতীতেও এমন হয়েছিল। তখন জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে সমাধান হয়েছিল। এবার অতিরিক্ত বরাদ্দ পেয়েছে মাত্র নয় মিল।
জেলা খাদ্য কর্মকর্তা বাবুল হোসেন বলেন, ২৮মিল মারিকের তালিকা খুলনায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে মাত্র ৯ জনের নামে বরাদ্দ দিয়ে আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা (আরসি ফুড) আব্দুস সালাম চিঠি ইস্যু করেছে। এই নিয়ে মিল মালিকরা আপত্তি জানিয়েছেন। আমি এব্যাপারে বিব্রত। তবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।
মিলারদের কাছ থেকে জানা গেছে, বোর মৌসুমে মোট চাল সংগ্রহের প্রায় ৯০ ভাগ কেনা হয় কুষ্টিয়া সদর উপজেলা থেকে। খাজানগর মোকাম থেকে চাল সংগ্রহ হয় সব থেকে বেশি।
টিএইচ