সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

কুষ্টিয়ায় সরকারি খালের মুখ বন্ধে হুমকীতে ২ হাজার বিঘা জমির ফসল 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় সরকারি খালের মুখ বন্ধে হুমকীতে ২ হাজার বিঘা জমির ফসল 

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ সরকারি খালের মুখ বন্ধ করে গড়াই নদী শাসন (ড্রেজিং) করায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। হুমকিতে পড়েছে কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের গোবিন্দপুর, এনায়েতপুর ও এতমামপুর গ্রামের অন্তত দুই হাজার বিঘা কৃষি জমি। ঝুঁকিতে রয়েছে অর্ধশত পুকুর।

স্থানীয়রা জানান, বার বার বলার পরও পাউবো অপরিকল্পিতভাবে নদী শাসন করেছে। বন্ধ করে দিয়েছে খালের মুখ। এতে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ফসলসহ জমি প্লাবিত হয়েছে। দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কয়েক হাজার কৃষক। তারা দ্রুত বালু অপসারণের দাবি জানান।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গোবিন্দপুর গ্রামের কোলের মাঠ থেকে গড়াই নদী পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার ড্রেনেজ খাল রয়েছে। তা দিয়ে গোবিন্দপুর, এনায়েতপুর ও এতমামপুর গ্রামের প্রায় দুই হাজার বিঘা কৃষি জমিতে পানি যাওয়া-আসা করে। 

তবে প্রায় দুই মাস আগে গড়াই নদী শাসনের নামে ড্রেজিংকৃত বালু ফেলে ওই খালের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। আর কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ধান, পাটসহ বিভিন্ন ফসল প্লাবিত হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে অন্তত ৫০টি পুকুর।

সরেজমিনে দেখা যায়, খালের পানিতে স্রোত নেই। সদ্য রোপণ করা ধানের চারা ডুবে গেছে। পাটক্ষেতে হাঁটু পানি। আর খালের মাথায় প্রায় ৩০০ মিটার চওড়া বালুর স্তুপ রয়েছে।
এসময় গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক মো. টুটুল জানান, মাঠে পুকুরসহ তার প্রায় ১৮ বিঘা জমি রয়েছে। তার মধ্যে ৭ বিঘা জমিতে ৫দিন আগে আমন ধানের চারা রোপণ করেছেন। তবে গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে চারা পানিতে ডুবে গেছে।

তার মতে, দু’মাস আগে পাউবো বালু ফেলে খালের মুখ ভরাট করেছে। সেজন্য পানিপ্রবাহ বন্ধ হওয়ায় ধান ও পাটক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। অন্তত দুই হাজার বিঘা জমি হুমকিতে পড়েছে।

কৃষক লিয়াকত আলী জানান,  ১৫ দিন পরেই পাট কাটা শুরু হবে। তবে পাটের জমিতে হাঁটু পানি জমে আছে। পানির কারণে পাটের মাথা লাল হয়ে মরে যাচ্ছে। তিনি দ্রুত পানি অপসারণের দাবি জানান।

তবে দুই মাস ধরে খালের মুখ বন্ধের বিষয়টি জানেন না বলে জানান কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ড্রেজার) মো. জিনারুল ইসলাম।

তিনি জানান, নদী শাসনের সময় খালের মুখ ভরাট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে বালু সরানোর জন্য চেয়ারম্যানের লোকদের নিজস্ব ভ্যাকু দিয়েছিলেন। তবে উপ-সহকারী প্রকৌশলীর এ বক্তব্য অস্বীকার করে যদুবয়রা ইউপির চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান জানান, তাকে খালের মুখ বন্ধ ও জলাবদ্ধতার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা। এতে চরম বিপাকে পড়েছে সবাই।

তবে কুষ্টিয়া ৪ আসনের এমপি আব্দুর রউফ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার সঙ্গে কথা বলে দ্রুত বালু অপসারণ করে পানিপ্রবাহ সচল করার আশ্বাস দিয়েছেন। 

টিএইচ