কুড়িগ্রামে হঠাৎ করে উজানের ঢলে নদ নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় মৃদু ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় দুধকুমার, ব্রহ্মপূত্র, ধরলাসহ বেশ কয়েকটি নদীর তীরবর্তী মানুষের ভিটাবাড়ি ও ফসলি জমি নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ভাঙনরোধের চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি। ইতোমধ্যে একটি মাধ্যমিক স্কুল নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। অন্যদিকে যেকোন সময় চর ভগপতীপুরে একটি মাত্র কমিউনিটি ক্লিনিক নদীর মুখে, যেকোন সময় বিলীন হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার দুধকুমার ও ব্রহ্মপূত্র নদে ভাঙনে তীরবর্তী মানুষের বসতভিটাসহ ফসলিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ের চরভগবতীপুরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ভাঙনরোধের চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি।
এ ভাঙনে চরভগবতীপুরে একটি মাধ্যমিক স্কুলসহ আশেপাশের বেশকিছু ঘরবাড়ি ও ফসলিজমি নদীগর্ভে চলে গেছে। চরভগবতীপুরে একমাত্র কমিউনিটি ক্লিনিক সেটাও নদীর মুখে বিলীনের পথে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যা হওয়ার আগেই যেভাবে নদী ভাঙছে। বন্যার সময় এ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে। তাই জরুরিভিত্তিতে নদী শাসন ব্যবস্থা চায় এলাকাবাসী।
চরভগবতীপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন ধরে ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমাদের কমিউনিটি ক্লিনিকটি ভাঙনের মুখে। ক্লিনিকটির স্থাপনা নিলামে তোলা হয়েছিল। কিন্তু সরকারি নির্ধারিত মূল্য না উঠায় স্থাপনাটি বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। যেকোন মহুর্তে এই ক্লিনিকটি নদীগর্ভে বিলীন হবে। তাই আমরা ক্লিনিকের সব আসবাবপত্র ও ওষুধ অন্য জায়গায় সড়িয়ে নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, অনেক চেষ্টা করেও ক্লিনিকটি রক্ষা করা গেলো না। আবার কবে ওই চরে ক্লিনিকের স্থাপনা হবে জানি না। তবে অস্থায়ীভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গফুর মিয়া বলেন, নদী ভাঙনে চরভগবতীপুরে প্রায় ৩৬টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আমরা বসতভিটা হারানোর পরিবারের তালিকা তৈরি করছি। তিনি আরো বলেন, উপজেলা প্রশাসনের নির্মাণ করা একটি মাধ্যমিক স্কুল নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আর একটি কমিউনিটি ক্লিনিক সেটাও নদীর মুখে।
কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্রে পানি বাড়ছে। তবে মাত্রা কম। চরাঞ্চলে কিছু ভাঙন রয়েছে। ভগবতীপুরে চরের ভাঙন প্রতিরোধে অস্থায়ী কার্যক্রমের জন্য প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে সেখানে ওই মূল্যমানের স্থাপনা ও সম্পদ নেই। তারপরও আমরা ভাঙন রোধে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
টিএইচ