দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় আগাম আলু চাষের জন্য বিখ্যাত। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় করলা, বেগুনসহ বিভিন্ন মৌসুমী সবজি ঘরে তুলে এবং আগাম জাতের ধান কেটে গ্র্যানুল্যা, স্টোরিজ, সেভেন জাতের আলুসহ মাঠের পর মাঠ বিভিন্ন জাতের আলু রোপণ করছেন কৃষকরা। উঁচু সমতল জমিতে আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলতি বছর ২ হাজার ২৬০ হেক্টর জতিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৫ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ করা হয়েছে। আগামী ৮/১০ দিনের মধ্যে এক হাজার হেক্টর জমিতে আগাম আলু রোপণের সম্ভাবনা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দ্বিগুণ লাভের আশায় মাঠে মাঠে চলছে জমি প্রস্তুত ও আলু রোপণের কাজ। অনেকে জমি তৈরি, আগাছা পরিষ্কার ও বীজ সংগ্রহ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। এলাকায় আগাম আলু রোপণকে ঘিরে কৃষকদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে মাঠজুড়ে।
উপজেলার আলোকঝাড়ী ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আলুচাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, গত বছর আগাম ধান কাটার পর আলু উত্তোলন করে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দ্বিগুণ টাকা লাভ করি। এজন্য এবারও বেশি জমিতে ৫৫ থেকে ৬০ দিনে উত্তোলনযোগ্য সেভেন জাতের আলু রোপণ করছি। এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় গতবারের চেয়ে ভালো ফলনের আশা করছি।
খামারপাড়া ইউনিয়নের নেউলা গ্রামের আবু তাহের তিন বিঘা, কায়েমপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম এক বিঘা, আলী দেড় বিঘা ও আরিফুল দুই বিঘা জমিতে আগাম আলু রোপণের প্রস্তুতি নিয়েছেন।
আলু চাষি আবু তাহের বলেন, আমাদের এলাকার মাটি উঁচু এবং বালু মিশ্রিত হওয়ায় বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে আগাম আলু চাষে তেমন কোন ভয় থাকে না। ফলনও ভালো হয়। উৎপাদিত আলু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হওয়া যায়। অন্য ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাপক অবদান রাখে আগাম আলু চাষ। যার আলু যত আগে উঠবে সেই কৃষক তত ভালো দাম পাবেন। তাই প্রতিযোগিতা করে সবাই লাভের আশায় আগাম জাতের আলু চাষে মাঠে কাজ করছি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ.ম জাহিদুল ইসলাম বলেন, আলু চাষিরা নিজেরাই প্রতিবছর বীজ সংরক্ষণ করে রাখেন। অনেকে আবার বাজার থেকে বীজ কিনে রোপণ করেন। তুলনামূলক উঁচু জমিগুলোতে আলু চাষ শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত মুনাফার আশায় অনেকে তাদের জমিতে আলু চাষ শুরু করেছেন। আমরা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, এ উপজেলার মাটি আগাম আলু চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাঠের পর মাঠ আগাম আলু চাষে মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা। প্রতিবছর এ এলাকার কৃষক আগাম আলু চাষ করে লাভবান হন। আমাদের কৃষি অফিস থেকে আগাম আলু চাষে কৃষকদের বিভিন্ন সহযোগিতা দিয়ে থাকি।
টিএইচ