কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার ৭নং গোপগ্রাম ইউনিয়নের আমলাবাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে।
কোর্ট নোটিস সূত্রে জানা যায়, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধ প্রক্রিয়ায় শিক্ষক নিয়োগে মরিয়া হয়ে ওঠে ম্যানেজিং কমিটির একটি কুচক্রী মহল। অবৈধ প্রক্রিয়ায় শিক্ষক নিয়োগবাণিজ্যের কথা ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে আদালত থেকে গত ১ জুন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। আদালতের (মামলা নং-৬১/২০২৩) বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আত্তাফ হোসেন বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, তারা আমার সই জাল করে সব ধরনের কার্যকলাপ চালিয়েছে, তাই আমি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে গেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান বলেন, পরীক্ষার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষায় মোট ২২ প্রার্থী আবেদন ফরম জমা দিয়েছেন। যাচাই-বাছাই করে ছয় প্রার্থীর আবেদন ভুল থাকায় বাতিল বলে গণ্য করা হয়েছে এবং ১৬ প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।
তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, পরীক্ষা কবে হবে, কোন জায়গায় হবে— এমন কোনো সঠিক সময় তিনি বলতে পারেননি। নিয়োগের বিষয়ে কোনো রেজুলেশন তার কাছে নেই। তিনি তোপের মুখে পড়ে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার সব ফাইলপত্র আমার এক সহকারী শিক্ষকের কাছে দেয়া আছে। তবে কার কাছে কাগজপত্র রয়েছে এবং কাদের যোগসাজশে এরকম হচ্ছে— তা তিনি বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, যথাসময়ে এ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ম্যানেজিং কমিটির কিছু কুচক্রী মহল সুকৌশলে অতিগোপনে গত ২ জুন কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার জন্য প্রার্থীদের সকাল ৯টার দিকে ডেকে নিয়ে যায় এবং গোপনভাবে পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা চালায়।
তবে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে খোকসা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজমুল হক পালিয়ে যান।
পরবর্তীতে আমলাবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন সব বলেন, কিছু সমস্যা থাকার কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হলো। সমস্যা সমাধানের পর আমলাবাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
পরীক্ষার বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজমুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, পরীক্ষার বিষয়ে সবকিছু জানেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আমি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারব না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমানের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এখন গাড়িতে রয়েছি; পরে কথা বলব। পরে একাধিকবার তার মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
টিএইচ