শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

গ্যাস সংকট : ১০ মাস যমুনা সারকারখানার উৎপাদন বন্ধ 

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

গ্যাস সংকট : ১০ মাস যমুনা সারকারখানার উৎপাদন বন্ধ 

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তারাকান্দি যমুনা সারকারখানায় গ্যাস সংকটের কারণে দীর্ঘ ১০ মাস যাবত। ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে করে প্রতিমাসে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা হারে আনুমানিক এক হাজার ৫০ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। 

অপরদিকে দীর্ঘ সময় কারখানা বন্ধ থাকায় মূল্যবান যন্ত্রাংশ মরিচা ধরে নষ্ট হওয়ার উপক্রম। সেই সঙ্গে কারখানার প্রায় সহস্রাধিক শ্রমিক পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাবন করছেন। এভাবে কারখানা বন্ধ থাকলে সামনের ইরি-ব্যুরো পিক সিজনে সারের সংকটের শঙ্কায় রয়েছে কৃষকরা। 

কারখানার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ১৯৯১ সালে ইউরিয়া উৎপাদনে যায় তারাকান্দি যমুনা সারকারখানা। বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা (বিসিআইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন কেপিআই-১ মানসম্পন্ন যমুনা সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে দৈনিক ১ হাজার ৭০০ টন ইউরিয়া উৎপাদন করে আসছিল। কারখানার নিরবিচ্ছিন্ন উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪২-৪৩ পিএসআই গ্যাসের প্রয়োজন। গ্যাসের চাপ স্বল্পতা ও বিভিন্ন ত্রুটির কারণে উৎপাদন কমে বর্তমানে ১ হাজার ৪০০/৪৫০ টন ইউরিয়া উৎপাদন হয়। 

সমপ্রতি ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে সার উৎপাদন নিরবিচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিসিআইসি। এজন্য সেখানে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে যমুনা সারকারখানায় গত ১৫ জানুয়ারি থেকে গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এ্ল ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। এরপর থেকেই যমুনায় ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। 

কারখানা সূত্রে আরও জানা যায়, চলতি বছরের আগস্টের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে বন্ধ কারখানাটিতে ২৩৮ জন কর্মকর্তা, ২০৭ জন কর্মচারী, ৩৯২ জন শ্রমিক ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক ১৫৯ জন জনবল কাজ করছে। যাদের পিছনে প্রতিমাসে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। অপরদিকে কারখানার কমান্ড এরিয়ায় সারের চাহিদা সীমিত পরিসরে মেটাতে অন্য কারখানা হতে দুই অর্থবছরে সার আমদানি করতে হয়েছে প্রায় ৫১ হাজার ৯৯৭ টন। 

এক কর্মকর্তা জানান, কারখানায় দৃশ্যমান কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি নেই। যদি গ্যাস সরবরাহ পাওয়া যায় তাহলে নিজস্ব দক্ষ জনবল দ্বারা সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে ৭ দিনের মধ্যেই কারখানা উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব। যেহেতু কারখানাটি উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন রাসায়নিক কারখানার করোসেন এবং ইরোসেনের ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয়। 

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে পরবর্তীতে চালাতে গেলে সব যন্ত্রাংশের উপর একটা বিরূপ প্রভাব পড়ে। অপরদিকে কারখানার ভৌগোলিক কারণে উত্তরাঞ্চলের দুই বিভাগের ১৬ টি জেলায় স্বল্পতম সময়ে ন্যায্যমূল্যে সামনের পিকসিজনে কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নের জন্য তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এ্ল ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃস্টি কামনা করে যমুনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ করে যমুনা সার কারখানাটি চালুর দাবি কর্মকর্তা কর্মচারী শ্রমিক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। 

টিএইচ