রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১
The Daily Post

ঘোড়াঘাটে নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘরছাড়া বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

ঘোড়াঘাটে নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘরছাড়া বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা

দেশ জুড়ে চলমান কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের রেশমাত্র পড়েনি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটসহ আশপাশের উপজেলায়। তবে পৌরসভার নুরজাহানপুর গ্রামের একটি লিচুর বাগান থেকে ১৬টি ককটেল সাদৃশ্যবস্তু, চাকু ও বাঁশের লাঠি উদ্ধারের ঘটনায় থানায় নাশকতার একটি মামলা হয়েছে। গত ২২ জুলাই পুলিশ বাদী হয়ে থানায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করে।

এরপর থেকেই আতঙ্ক এবং গ্রেপ্তার এড়াতে ঘরছাড়া বিএনপি-জামায়াতের শতশত নেতাকর্মী। অধিকাংশ নেতাকর্মী নিজ এলাকা থেকে অন্যত্র গিয়ে রাত্রীযাপন করছে। দিনের বেলাতেও তারা এলাকায় কিছুটা গোপনে চলাফেরা করছে। তবে পুলিশ বলছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা তথ্য প্রমাণ ছাড়া তারা কাউকে গ্রেপ্তার করছে না।

মামলার পর পুলিশ এজাহারভূক্ত এক নাম্বার আসামি আব্দুল আলীম ওরফে আরিয়ানকে গ্রেপ্তার করেছে। আলীম পৌর এলাকার নয়াপাড়া গ্রামের মৃত মতিয়ার রহমানের ছেলে। এজাহারভূক্ত অন্য ১৫ জন আসামি এখনও ধরাছোঁয়ার বাহিরে। একই মামলায় আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ। তারা হলেন, পৌর ছাত্রদলের কর্মী আলিফ খাঁন এবং পৌর জামায়াতের কর্মী আল মামুন ওরফে আকাশ।

এদিকে ঘোড়াঘাটে শুধুমাত্র গত ১৭ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারে ছোট্ট পরিসরে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করার চেষ্টা করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে পুলিশের অনুরোধে তারা মিছিল না করেই ফিরে যায়। একইদিন পৌর এলাকার থানামোড় (ক্ষেতাবমোড়) থেকে একটি মিছিল বের হয়ে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের আজাদমোড় পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করে। পরে সেখানে পুলিশ উপস্থিত হলে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

অপরদিকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশে বেশ কয়েক দফায় পুরো জেলায় কারফিউ জারি করা হয়। কারফিউ চলাকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি চোখে না পড়লেও রাস্তাঘাটে নিয়মিত টহল দিতে দেখা গিয়েছে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের। এসব টহলে নেতৃত্ব দিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। কারফিউ চলাকালীন সময়ে এ উপজেলার সড়ক-মহাসড়ক ছিল অন্য সময়ের তুলনায় একেবারে ফাঁকা। হাটবাজারের দোকানপাট খোলা ছিল সল্প পরিসরে।

ঘোড়াঘাট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ বলেন, এই উপজেলায় কোন বিশৃঙ্খলা হয়নি। আমাদের নেতাকর্মীরা কোন আন্দোলন সংগ্রামে মাঠেও ছিল না। তবে পুলিশ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। টার্গেট করে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর আজিজার রহমান বলেন, সরকারের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্য পুলিশ কাজ করছে। কোন ঘটনা ছাড়াই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গায়েবী মামলা করে আমাদের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হয়রানি করে যাচ্ছে।

এদিকে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমরা স্থানীয়দের দেয়া তথ্যে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় ককটেল সাদৃশ্যবস্তুসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করেছি। বিধি মোতাবেক মামলা হয়েছে। তদন্ত করে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাচ্ছে আমরা তাদের গ্রেপ্তার করছি। তথ্য প্রমাণ ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। অপরাধ না করলে কেউ পালিয়ে থাকার কথা নয়। যারা অপরাধ সংঘঠিত করেছে কিংবা নেতৃত্ব দিয়েছে অথবা পরিকল্পনা করেছে তারাই গাঁ ঢাকা দিয়ে পালিয়ে আছে।

টিএইচ