আগামী ৮মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রথম দফায় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ঘরোয়া প্রচারণায় নেমেছেন অধিকাংশ সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা।
এখন পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দল আ.লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে ৫ জন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবে বলে শোনা যাচ্ছে। এসব দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভোটারদের কাছে দোয়া ও সমর্থন প্রার্থনা করছেন। অপরদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাঠে থাকা ১ ডজন প্রার্থীর মধ্যে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন জামায়াত।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্য বলছে, চারটি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত ঘোড়াঘাট উপজেলায় ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৭ হাজার ৮২ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫৩ হাজার ২১৫ জন এবং নারী ভোটার ৫৩ হাজার ৮৬৭ জন। পুরো উপজেলায় এই নির্বাচনে ৪৪টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা সদর থেকে প্রায় ৯৭ কিলোমিটার দূরত্বের এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আব্দুর রাফে খন্দকার শাহানসা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সদস্য কাজী শুভ রহমান চৌধুরী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহ মোহাম্মাদ শামীম হোসেন চৌধুরী, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও উপজেলা আ.লীগের সদস্য আইনজীবী রবিউল ইসলাম এবং উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আরিফুজ্জামান রানা সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী।
তাদের মধ্যে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী শামীম হোসেন চৌধুরী ব্যতিত বাকি সবাই হাট-বাজারে গিয়ে দোয়া চাচ্ছেন এবং উঠান বৈঠক করছেন। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী শামীম হোসেন চৌধুরী বলেন, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন যে সর্বশেষ তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন কিনা! তবে বিভেদ দেখা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আ.লীগে। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাফে খন্দকার শাহানসার সঙ্গে স্থানীয় দিনাজপুর-৬ আসনের এমপি শিবলী সাদিকের রাজনৈতিক দূরত্ব ও বিভেদ থাকায় এমপি ও তার কর্মী সমর্থকদের সমর্থন পাচ্ছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী শুভ রহমান চৌধুরী। তবে উপজেলা আ.লীগের একটি অংশ কাজ করছে বর্তমান চেয়ারম্যানের পক্ষে।
অপরদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রায় ১ ডজন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির আলমগীর হোসেন, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম আকাশ, উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম সরকার, উপজেলা যুবলীগের সদস্য ইফতেখার আহম্মেদ বাবু, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম রেজা, উপজেলা আনসার ভিডিপির কোম্পানী কমান্ডার মুক্তার হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শিবু কিস্কু, ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান, সমাজসেবক আবু সায়াদ চৌধুরী এবং উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আসিফ ইকবাল মানিকের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা সকলেই তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
তফসিল ঘোষণার দুই সপ্তাহ আগে পদটিতে নির্বাচনের ঘোষণা দেন সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা আলমগীর হোসেন। এরপর থেকেই ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য অন্য প্রার্থীদের কাছে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। উপজেলাটিতে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভোট ব্যাংক থাকায় আতংক হয়ে দাঁড়িয়েছেন জামায়াতের এই প্রার্থী।
আসন্ন এই নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুমিনা সরেন, উপজেলা মহিলা আ.লীগের সভানেত্রী মাজেদা বেগম, সাবেক সংরক্ষিত ইউপি সদস্য মর্জিনা বেগম, আ.লীগ নেত্রী নার্গিস বেগম এবং পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ফেরদৌসি বিলকিছ।
ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শাহীনুর আলম বলেন, নির্বাচনে ঘিরে আমরা সবধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। তফসিল অনুযায়ী যথাসময়ে মনোনয়ন উত্তোলনসহ সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন শেষ করতে আমরা বদ্ধ পরিকর।
টিএইচ