শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

চন্দনাইশে স্মারণকালের বন্যায় সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি 

চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চন্দনাইশে স্মারণকালের বন্যায় সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি 

দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়নে চার দিন অবিরাম মুষলধারে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ২০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

চাষীদের আউশ, রোপা আমন বীজতলা, বোনা আমন ও সবজি চাষীদের সবজিক্ষেতসহ নানা রকমের রোপণ ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আগস্ট মাসের বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা মারাত্মক আকার ধারণ করায় মাঠের ফসল ছাড়াও ঘরবাড়ি, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি ও মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

পানির স্রোতে দোহাজারী চাগাচর পুর্ব দোহাজারী কিল্লপাড়া বরকল বরমা বৈলতলী ধোপাছড়ি জামিরজুরী দিয়াকুলের আভ্যন্তরীণ যাতায়াতের সড়কগুলো ভেঙে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্মরণকালের ভয়াবহ এই বন্যায় লণ্ডভণ্ড হয়ে বিরানভূমিতে পরিণত হয়েছে শঙ্খ নদীর তীর ঘেষা ‘সবজিভান্ডার’ হিসেবে পরিচিত দোহাজারী লালুটিয়ার শঙ্খ চর ও সেনার চর। 

তাছাড়া পাশ্ববর্তী সাতকানিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খরস্রোতা শঙ্খ নদী তীরবর্তী এই চরে সারা বছর ধরেই বিভিন্ন শাক-সবজি উৎপাদন করা হয়। শতকরা ৮০জন কৃষি কাজ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এ এলাকায় শিল্পকারখানা না থাকায় শঙ্খ নদী তীরবর্তী লোকজন শাক-সবজি চাষের ওপর নির্ভরশীল। যাদের নিজস্ব জমি নেই তারাও বর্গা জমি নিয়ে  শাক-সবজির চাষ করেন। এতে হাজারের অধিক পরিবার সচ্ছলভাবে জীবিকা নির্বাহ করতেন। 

সারা বছর ধরে উৎপাদিত ফসলের মধ্যে বেগুন, মূলা, শিম, ঢেঁড়শ, কাকরোল, চিচিঙ্গা, বরবটি, ঝিঙ্গা, তিত করলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শসা, মিষ্টি কুমড়া, চালকুমড়া, লাউ, পেঁপেসহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি আবাদ করা হয়। জমিতে রোপণকৃত বর্ষাকালীন সবজি বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার মুহূর্তে বন্যার তাণ্ডবে ক্ষেত নষ্ট হয়ে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছেন শঙ্খ চরের সবজি চাষীরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি সবজি উৎপাদন মৌসুমে চন্দনাইশ উপজেলার দুইটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নে এক হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। তন্মধ্যে দোহাজারী পৌরসভা সংলগ্ন এলাকায় সবজি আবাদ হয়েছে ৫০০ হেক্টর জমিতে। শঙ্খ চরের প্রতিটি সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তাদের স্বপ্নবোনা ফসল কোমর সমান পলিমাটি এসে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় শত শত কৃষক অসহায় ও বেকার হয়ে পড়েছে। 

সবজী চাষী মীর আহমদ ও কোরবান আলী জানান, তার ২০০ হেক্টর জমিতে লাগানো পেঁপে বাগান বন্যার পানির তীব্র স্রোতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এতে আনুমানিক ৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে তার। লাভের আশায় সবজির আবাদ করে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে তিনি এখন দিশাহারা। 

চন্দনাইশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজাদ হোসেন বলেন, প্রাকৃতিক কারণে বর্ষাকালে দেশের কোথাও না কোথাও কম বেশি বন্যা দেখা দেয়। গ্রামের এই কৃষকরা যাতে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারেন মতো ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি কার্ডধারী কৃষকদের সহজে ব্যাংক থেকে কৃষি ঋণ পেতে সহযোগিতা করা হবে।

টিএইচ