দক্ষিণ চট্টগ্রামের বনবিভাগের আওতাধীন চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী লালুটিয়া রেঞ্জের বনসম্পদ অহরহ চুরি হয়ে যাচ্ছে। ইদানিং বিষয়টি নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে এই রেঞ্জের আওতাভুক্ত এলাকাসমূহের বনসম্পদ শূন্য হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা ও অর্থনৈতিক এবং অন্য কারণে সরকার এটার সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। যে কারণে এই বনায়ন কর্মসূচির জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।
অপরদিকে প্রভাবশালী মহল ও এক শ্রেণির বনসম্পদ চোরাকারবারিরা স্বাধীনভাবে যখন তখন নিজেদের ইচ্ছামত মূল্যবান সেগুন, গর্জন, কড়াই, গামারী প্রভৃতি গাছ কেটে দোহাজারী লালুটিয়া রোড দিয়ে প্রতিদিন গাড়ি করে বিওসির মোড় সমিলে মজুদসহ চোরাই পথে দোহাজারী হতে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করছে।
দোহাজারী রেঞ্জের এলাকাভুক্ত হাতিয়া খোলা, চিড়িংঘাটা, দোহাজারী দিয়াকুল ধোপাছড়ি সড়কের পার্শ্বে ও হিমাংছড়ি নামক পাহাড়ি এলাকাকে সরকার বিগত ১৯৮৬-৮৭ বছরেরসহ ও ২০২১-২২ সালে প্রায় কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ে, বনায়ন কর্মসূচির আওতায় এনে সেগুন, গর্জন, কড়াই, গামারী প্রভৃতি গাছের বাগান করেছিল।
এসব এলাকাসমূহ হতে কেউ কোনদিন বন সম্পদ চুরি করতে সাহস পায়নি, কিন্তু গত কয়েক বছর হতে বনসম্পদ রীতিমত চুরি হয়ে যাচ্ছে।
সমপ্রতিক বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ বার্মা হতে আগত লোকেরা দোহাজারী রেঞ্জের লালুটিয়া পাহাড়ি এলাকায় ঘরবাড়ি তৈরি করে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছে। এখানে কতিপয় অসাধু কাঠব্যবসায়ী প্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের এ সকল বনজ সম্পদ চুরি করার কাজে নিয়োজিত করছে, অপরদিকে দোহাজারী-লালুটিয়া বন রেঞ্জের কর্মকর্তা আতিক বাবু বিগত ২০২২-২৩ সালে দায়িত্বে নিয়োজিত গত ০৫মে দোহাজারী সংরক্ষিত বন এলাকার গাছ কাটার দৃশ্য দেখার জন্য সরজমিনে পাহাড়ে গেলে ১ কিলোমিটার দূর্গম টিলা/ ঢালু/ উপতাক্যায় অসংখ্য চোরাইকৃত কাটা সেগুন গাছের গোড়া চোখে পড়ে ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এবারের ঈদের আগের দিন রাতে স্থানীয় কিছু লোকজনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাহাড়ের মূল্যবান গাছ সেগুন গাছ কাটার সাথে সংশি¬ষ্টতা খুঁজে পাওয়া যায়। এরা, বার্মা হতে আগত লোকদের চুরি করার কাজে নিয়োজিত করছে।
তাদের ভাষ্য, এখানকার কাঁঠচোরেরা তেমন কৌশলী নয়। এসকল বর্মী কাঠ চোরদের সঙ্গে এখানকার কাঁঠচোররা এসে কাঁঠচুরির ব্যাপারে দক্ষতা অর্জন করে। তাছাড়াও বার্মার এই সকল লোকেরা বড় ধামা না হয় এক প্রকার দা দিয়ে প্রকাশ্য বড় বড় সেগুন গাছের কিছু অংশ কেটে রাখে।
এই ব্যাপারে দোহাজারী লালুটিয়া বন রেঞ্জের দায়িত্ব নিয়োজিত রেঞ্জ কর্মকর্তা আতিক বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে কাঠ নিধনকারীর বিরোদ্ধে বন মামলা করার কথা স্বীকার করে বলেন পাচাররোধে বনে খবর পেলে অভিযান পরিচালনা করে কাঠ জব্দ করব। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টিএইচ