পাবনার চাটমোহরে বিভিন্ন নদীর মাঝখানে, ক্যানেলে ও বিলের মুখে পানি প্রবাহের বাধা সৃষ্টি করে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অবৈধ সোঁতিবাঁধ স্থাপন করে মৎস্য নিধনে মেতে উঠেছে। চাটমোহরসহ চলনবিল অঞ্চলে সোঁতিবাঁধে মৎস্য নিধনের যেন উৎসব শুরু হয়েছে।
বিভিন্ন ব্যক্তিকে ম্যানেজ করেই এই সোঁতিবাঁধ স্থাপন করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে নামকাওয়াস্তে দু-একটি সোঁতিবাঁধ অপসারণ করলেও অধিকাংশ সোঁতিবাঁধ অপসারণে কোনো পদক্ষেপ নেই। এমনকি একটি সোঁতিবাঁধের পাশ দিয়ে গিয়ে অন্যটি উচ্ছেদ করা হয়েছে।
উপজেলার চিকনাই নদীর বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৫টি স্থানে সোঁতিবাঁধ বসানো হয়েছে। এসব সোঁতিবাঁধের ফলে আশপাশের বিলের পানি নিষ্কাশনে চরম বাধার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া খলিশাগাড়ি বিলের পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি করে কিনু সরকারের জোলায় অবৈধ সোঁতিবাঁধ বসিয়েছে প্রভাবশালীরা। সোঁতিবাঁধ স্থাপনকারীরা কৃষির ক্ষতি করে মাছ নিধনের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিভিন্ন স্থানে ম্যানেজ করে এই অবৈধ কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে দু-একটি সোঁতিবাঁধ উচ্ছেদ করলেও অধিকাংশ সোঁতিবাঁধ নির্বিঘ্নে চালানো হচ্ছে। বাঁধ স্থাপনের ফলে বিভিন্ন বিলের পানি নিষ্কাশন চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে আসন্ন রবিশস্য আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত বুধবার কিনু সরকারের জোলায় স্থাপন করা একটি সোঁতিবাঁধ অপসারণ করে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তর। একই বাঁধটি গত সোমবার অপসারণ করা হয়েছিল। অথচ এই জোলাতেই আরও দুটি সোঁতিবাঁধ রয়েছে।
গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের দাঁথিয়া কয়রাপাড়া ও হোগলবাড়িয়া এলাকায় চিকনাই নদীর ওপর স্থাপিত একটি সোঁতিবাঁধ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেদুয়ানুল হালিম অপসারণ করলেও ২-৩ ঘণ্টা পরই সেটি ফের স্থাপন করে মাছ নিধন শুরু করেছে প্রভাবশালীরা। চিকনাই নদীতে একাধিক সোঁতিবাঁধ স্থাপন করে মাছ নিধনে মেতে উঠেছে একটি মহল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেদুয়ানুল হালিম ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আ. মতিন বলেন, সব সোঁতিবাঁধ অপসারণ করা হবে। অবৈধ সোঁতিবাঁধ উচ্ছেদের অভিযান চলমান আছে। কিন্তু তাদের কথার তেমন কোনো প্রতিফলন নেই।
টিএইচ