রাজশাহীর চারঘাটের হাট-বাজারগুলোতে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে বাড়তি দামে বিক্রয় হচ্ছে নিত্যপণ্য। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারী না থাকায় সরকারের বেঁধে দেয়া সীমার চেয়ে বেশি দামে বিক্রয় হচ্ছে আলু, পেঁয়াজসহ প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য। অতি প্রয়োজনীয় এই পণ্যগুলোর দাম নিয়ন্ত্রণে এখনই পাইকারী ও খুচরা বাজারে অভিযান চান সাধারণ ভোক্তারা।
নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে সরকার দাম বেঁধে দিলেও অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় কেজিপ্রতি ১৫-২০ টাকা বেশিতে বিক্রি করছে। এছাড়াও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে অন্য সিজেনাল সবজিগুলো।
কোল্ডস্টোর গেট থেকে প্রতি কেজি আলু ৩৮ টাকা দরে আমাদের কিনতে হচ্ছে, এর সাথে পরিবহন খরচ, পঁচন এগুলো যোগ করে আমরা খুচরা ব্যবসায়ীদের নিকট কেজি প্রতি ৪০-৪১ দরে বিক্রয় করছি বলে জানিয়েছেন চারঘাট বাজারের পাইকারী আলু ব্যবসায়ী সুমন। পাইকারী পর্যায়ে আলুর দাম না কমলে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
সরেজমিন শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) উপজেলার কয়েকটি বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কেজি প্রতি আলু বিক্রয় হচ্ছে ৪৫ টাকা, আমদানিকৃত পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা এবং ডিম ১২-১৩ টাকা, ব্রয়লার মুরগী ১৬০ টাকা। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে পেঁয়াজ কোন কোন ক্ষেত্রে ২০ টাকা, আলু ১০-১৫ টাকা ও ডিম ১ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
চারঘাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সবজি ব্যবসায়ী চাঁন মিয়া বলেন, পাইকারী বাজারে আলু ও পেঁয়াজ বেশি দামে কেনার জন্য খুচরা বাজারে তাদেরকে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তবে আড়ৎ এ দাম কম থাকলে আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারবো বলে তিনি জানান।
তবে ক্রয় ভাউচার দেখতে চাইলে অধিকাংশ সবজি ব্যবসায়ী তা দেখাতে ব্যর্থ হন। একই চিত্র দেখা যায় উপজেলার সারদা বাজার, নন্দনগাছি বাজার, কাঁকড়ামাড়ী বাজারসহ অন্য বাজারগুলোতে।
এদিকে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মেরামতপুরের ভ্যানচালক গোলাম মোস্তফা জানান, অতিরিক্ত দাম দিয়ে পণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা থাকা সত্বেও আমাদের স্বল্প পরিমানে কিনতে হচ্ছে।
সরকারের নির্দেশনা থাকা সত্বেও এসকল পণ্যেও দাম বৃদ্ধির কারন কি? তাই স্থানীয় প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকারের উচিৎ এখনই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া। এছাড়া অনেক ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরির লক্ষে পেঁয়াজ ও আলু মজুদ করাছে বলে জানান স্থানীয় একজন ক্রেতা।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মানজুরা মুশাররফ বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রাণালয় থেকে এ সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা পাই নাই তবে বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের সরবরাহের সুযোগ নিয়ে কৃত্রিম সংকট করলে অথবা অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ, আলুসহ নিত্য পণ্যে বিক্রয় করলে উপজেলা সব হাট-বাজারগুলোতে অভিযান চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টিএইচ