মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
গত শনিবার পুলিশের এ বিশেষায়িত ইউনিটের প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়টি জানান। আটকদের মধ্যে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার এক পরিবারের তিনজন রয়েছেন। তারা হলেন, তালার গোনালী নলতা গ্রামের সাইকেল মেকানিক শরিফুল ইসলাম (৪৬), তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৩৮) ও মেয়ে হাবিবা (২০)। গত ২৫ জুলাই বাড়ি থেকে একসঙ্গে বের হন তারা। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
রোববার (১৩ আগস্ট) সকালে তালা উপজেলার খলিলগর ইউনিয়নের গোনালী নলতা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খুলনা-পাইকগাছা সড়কের পাশে ছোট্ট একটি দোকান রয়েছে শরিফুলের সেখানেই এক সাথে বসবাস করতেন তারা। সেটি এখন তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে।
স্থানীয় বাসিন্দা খালেক জানান, দোকানটিতে সাইকেল মেরামত করে সংসার চালাতেন শরিফুল। পরিবারটি অত্যন্ত দরিদ্র। শরিফুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের বসতঘরটি তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গত ২৫ জুলাই সকালে স্ত্রী আমেনা বেগম, মেয়ে হাবিবাকে নিয়ে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন শরিফুল। ওই দিন বিকাল থেকে তাদের মোবাইল নম্বর বন্ধ পান স্বজনরা। কোনোভাবেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তারা।
শরিফুলের বড় ভাই নজরুল মোড়ল বলেন, শরিফুল সাইকেল মেকানিকের কাজ করে সংসার চালায়। পৌতৃক ভিটায় থাকে না রাস্তার পাশে দোকানে থাকে। কখনও খারাপ কোনও কাজের সঙ্গে জড়িত হয়েছে, এমন তথ্য এলাকার মানুষ দিতে পারবে না। আপনারা খোঁজখবর নিয়ে দেখুন।
জঙ্গির যোগসূত্র তো দূরের কথা, এর অর্থও আমরা বুঝি না। তিনি আরও বলেন, দুই বছর আগে এই জঙ্গি সন্দেহে সিরাজগঞ্জ থেকে শরিফুলের মেয়ের জামাতা আরিফুল ইসলাম শান্তকে আটক করা হয়েছিল। বর্তমানে সে কারাগারে। গরু বিক্রয় ও জমি বন্ধক রেখে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে আদালত থেকে জামিনে মুক্ত করতে সিরাজগঞ্জে যাচ্ছিল শরিফুল, তার স্ত্রী এবং মেয়ে।
শরিফুল কোনও দলের রাজনীতি করেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল মোড়ল বলেন, জাকের পার্টির ভক্ত শরিফুল। প্রতিবছর ওরস হলে যায়। মাঝেমধ্যে আমি যাই ওরসে। এটা তো কোনও রাজনৈতিক দল না। জঙ্গির সঙ্গে আমার ভাইয়ের পরিবারের যোগসূত্র আছে, এটা আমি কখনও বিশ্বাস করি না। তাদের আটকের কথা শুনে আমরা হতভম্ব।
ওই পরিবারের বিষয়ে জানতে চাইলে তালা থানার ওসি চৌধুরী রেজাউল করিম জানান, এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাইছি না। তবে আমরা পরিবারটির বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।
টিএইচ