প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে কাগজে কলমে, কাজ শতভাগ সম্পন্ন দেখিয়ে প্রকল্প বরাদ্দের টাকাও উত্তোলন করে নিয়েছে প্রকল্প কমিটি। কিন্তু সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। এখনো জরাজীর্ণ রয়েছে যাত্রী ছাউনিটি নামমাত্র কাজ আর ঘষা মাজা করেই বরাদ্দকৃত প্রকল্পের টাকা গিলে খেয়েছে প্রকল্প কমিটি ও কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্তারা।
জানাযায়, সড়কে চলাচলরত যাত্রীদের রোদ-বৃষ্টির দুর্ভোগ লাঘবে রাখালভোগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী ছাউনি নির্মাণে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষাণাবেক্ষণ (টিআর-নগদ) সাধারণ উন্নয়ন ২য় পর্যায়ে ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও শেষ হয়নি কাজ। কাজ শেষ না হলেও কর্মকর্তাদের জোগসাজসে কাজ শতভাগ সম্পন্ন দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে অনেক আগেই। তবে প্রকল্প কমিটির সভাপতি বলছে কাজ চলমান রয়েছে।
রাখালভোগা গ্রামবাসীরা জানান, কাজ না করেই যদি শতভাগ কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে টাকা তুলে নিতে পারে। তাহলে কাজ না করলেও তো কোন সমস্যা হবে না তাদের। তারা আরও বলেন, ৬০ হাজার টাকার যাত্রী ছাউনির নির্মাণ কাজ আর কতটুকু হবে এটা এখন দেখার বিষয়।
ওই গ্রামের রিফাজ হোসেন ও শুভ বলেন, এখানে যাত্রী ছাউনি ছিলো অনেক আগে থেকেই। সবি ঠিক ছিলো ঝড়ে একটি পিলার ভেঙে যায় এবং উপরের ছাউনি উড়ে যায়। কিছু দিন আগে দেখলাম ইউপি মেম্বার রেজাউল করিম মন্টুর মাধ্যমে আমাদের এক চাচা মিস্ত্রী দিয়ে ভাঙা পিলারটি তৈরি করাসহ সিমেন্ট গোলা দিয়ে ফাটা-চোটা জায়গায় পুটিং দিতে। তাছাড়া তো আর কোন কাজই করে নাই।
আবুবক্কর বলেন, কাজের কাজ তো কিছুই করেনি, শুধু ১টি পিলার তৈরি, পুটিং আর শুনছি উপরের চালটা করে দেবে এতেই ৬০ হাজার টাকা শেষ।
প্রকল্পের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, জরাজীর্ণভাবে যাত্রী ছাউনিটি পড়ে থাকায় স্থানীয়দের মাধ্যমে আমি সাবেক এমপি শফিকুল আজম খান চঞ্চলকে বিষয়টি জানালে তিনি যাত্রী ছাউনির জন্য আমাদের ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন। কিন্তু বর্তমান এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর আগের কমিটি পরিবর্তন করে তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য রেজাউল করিম মন্টুুকে সভাপতি করে নতুন প্রকল্প কমিটি করে দেয়।
প্রকল্প কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য রেজাউল করিম মন্টু বলেন, কাজ চলমান রয়েছে, ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দে কি কাজ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২টি পিলার, সামনে একটু ঢালাই, পিলাস্টার আর দু-এক দিনের মধ্যে উপরের চালের কাজটা করবো।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, এখনো প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে আমি কিছু বলতে পারবো না বলে জানান।
মহেশপুর ইউএনও ইয়াসমিন মনিরা বলেন, যে যে প্রকল্পের কাজ হয়নি আমার কাছে সে সব প্রকল্পের তালিকা দেন। আমি সেগুলো যাচাই বাছাই করে পরে আপনাকে জানাবো।
টিএইচ