নীলফামারীর জলঢাকায় শিক্ষার্থী শূন্য অবস্থায় চলছে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। অভিভাবকদের অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রায় এক মাস যাবত ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী পাঠাচ্ছেন না তারা।
এতে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের সিদ্বেশ্বরী জেলে ও কামার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এর আগে গত ৯ আগস্ট প্রধান শিক্ষক মোন্তাকেম চৌধুরী ও সহকারী শিক্ষিকা ফেরদৌসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, অশোভন আচারণের কারণে তাদের অন্যত্রে বদলির দাবিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট সকল অভিভাবক স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ করেন অভিভাবকরা।
অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রধান শিক্ষক মোন্তাকেম চৌধুরী ও সহকারী শিক্ষিকা ফেরদৌসির অন্যত্রে বদলির দাবিতে গত ১৬ আগস্ট বিদ্যালয় মাঠে মানব্বন্ধন করেন অভিভাবকরা। সরেজমিনে রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে সকল শ্রেণিকক্ষ ঘুরে দেখা যায়, কোন শ্রেণিকক্ষেই শিক্ষার্থী নেই।
শিক্ষার্থী শূন্য বিদ্যালয়ে বসে রয়েছেন ওই স্কুলে কর্মরত ৫ জন শিক্ষক। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রাক প্রাথমিকে ১৮ জন, প্রথম শ্রেণিতে ১৯, দ্বিতীয় শ্রেনিতে ১৮, তৃতীয় শ্রেণিতে ১০, চতুর্থ শ্রেণিতে ১৩ এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ১৭ জনসহ মোট ৯৫ শিক্ষার্থী রয়েছে ওই বিদ্যালয়ে।
এর মধ্যে রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) একজন শিক্ষার্থীও স্কুলে আসেননি। এছাড়াও গত ২২ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ২য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় ৯ দিনে শুধুমাত্র ৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী না পাঠানোর বিষয়ে একাধিক অভািভাবকের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, প্রধান শিক্ষক স্কুলে দেরিতে আসেন, সে কারণে ঠিকমত লেখাপড়া হয়না, তাই প্রধান শিক্ষকের বদলি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবো না।
সিদ্বেশ্বরী জেলে ও কামার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোন্তাকেম চৌধুরী বলেন, যে সকল শিক্ষার্থী ২য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি পরবর্তীতে তাদের পরীক্ষা নেয়া হবে। আমাদের মধ্যে কেউ শিক্ষার্থীদের আসতে বাধা দেয়ায় প্রায় ১ মাস যাবত স্কুলে শিক্ষার্থী কম আসতেছে।
ওই ইউনিয়নের ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে, তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শরিফা আকতার বলেন, অতিদ্রুত তদন্ত রিপোর্ট জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হবে, রিপোর্ট অনুযায়ি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
টিএইচ