শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৪ নং সিন্দুরখান ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী সিন্দুরখান বাজার সংলগ্ন পাট্টার পুল নামে পরিচিত এই ব্রিজটি মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিদিন সহস্রাধিক লোকের যাওয়ার একমাত্র অবলম্বন ব্রিজটিতে উঠলে ভয়ে আৎকে উঠে ছোট-বড় অনেকেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ব্রিজটিতে গাড়ি, সিএনজি, অটোরিক্সা বা মোটরসাইকেল উঠলে কেঁপে উঠে। এই বুঝি ধসে পড়ল মনে হয়, কয়েক সেকেন্ডর এমন আতঙ্ক যেন স্থানীয়দের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তবে বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বয়স্ক অনেকেই ভয়ে যানবাহন থেকে নেমে পায়ে হেঁটে পাড় হয় ব্রিজ। যেকোন মুহুর্তেই ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
দীর্ঘদিন ধরেই ব্রিজটি এমন অবস্থায় থাকলেও সংশ্লিষ্টদের নেই কোন পদক্ষেপ! ব্রিজটা প্রায় ১/১.৫ ফুট দেবে গেছে। প্রায় প্রতিটা পিলারেই ফাটল দেখা যায়। দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকলেও তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের, উপরন্তু এই ব্রিজ দিয়েই প্রতিনিয়ত অবৈধ বালুবাহী গাড়ি চলাফেরা করছে। ব্রিজের এমন অবস্থায় জন্য বালু খেকোদের দায়ী করছেন স্থানীয় বাসীন্দারা।
ব্রিজের নিচ দিয়ে প্রবাহিত ছড়াটির দিকে তাকালেই চোখে পরে বালু উত্তোলনের চিহ্ন!! যদিও বালু উত্তোলনের বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। তবুও একটা সিন্ডিকেট অবাধে বালু উত্তোলন করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন শ্রীমঙ্গলের উদ্যোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজীব মাহমুদ মিঠুন ও সহকারী কমিশনার ভূমি স্বন্দীপ তালুকদার একাধিকবার অভিযান চালিয়েও কিছুতেই কমাতে পারছেন না এই চক্রটিকে।
সদ্য সংস্কার হওয়া ভোজপুর টু সিন্দুরখান সড়কটিও আবার ধ্বংস করছে অবৈধ বালুবাহী গাড়ি। অবাধে একের পর এক বালি বোঝাই ট্রাক যাতায়াতের ফলে রাস্তা ও প্রায় সব কয়টি ব্রিজ কালভার্টে ফাটলের চিহ্ন পাওয়া যায়। ব্রিজের পার্শ্ববর্তী সিমেন্টের পিলারগুলো ভেঙে পরছে ব্রিজ দেবে যাওয়ার ফলে হেলে রয়েছে। মাইল ফলকগুলোও কোথাও কোথাও ভাঙা পাওয়া যায়।
স্থানীয় গ্রামবাসী ও বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে। অসাধু বালু উত্তোলনের অপরাধে বেশ কয়েকজনকে জরিমানা ও মালামাল জব্দ করা হলেও থেমে নেই তারা। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে গত ২৬ এপ্রিল সিন্দুরখান ইউপির শ্রীগাও, কামারগাঁও এলাকায় লাংলিয়া ছড়া হতে উত্তোলনকৃত ৩৫০০ফুট বালু জব্দ করেন সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এসময় বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্বন্দীপ তালুকদার জানান, অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে এমন অভিযান চলমান থাকবে। ইচ্ছেতো করে রোজ অভিযান করতে, কিন্তু অন্য কাজের জন্য তা হয়ে উঠে না। অবৈধ কোন বালু ব্যবসায়ীদেরকে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
টিএইচ