উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রাম। এ জেলায় ১৬টি নদী বিধৌত প্রায় চার শতাধিক চরাঞ্চল রয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী জীবনমান উন্নয়নে কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর পিছিয়ে পড়া জেলা কুড়িগ্রামকে এগিয়ে নিতে জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে কুড়িগ্রাম টেক্সটাইল মিলের নবায়ন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমসহ নারীদের আত্মকর্ম সংস্থান তৈরিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীদের প্রশিক্ষণ, বিদেশে লোক পাঠানোসহ বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বিনোদন শূন্য এ জেলায় ধরলা নদীর অববাহিকায় ডিসি পার্ক গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা।
জেলা প্রশাসকের এমন উদ্যোগে সাধারণ মানুষসহ বিনোদনপ্রেমীরা অনেক খুশি। কুড়গ্রামবাসী চায় ডিসি পার্ক দ্রুত বাস্তবায়ন।
কুড়িগ্রাম জেলায় প্রায় ২৪ লাখ মানুষের বসবাস। শহরে কোনো ধরনের বিনোদন কেন্দ্র নাই। একমাত্র বিনোদনের ভরসার জায়গা হলো ধরলা ব্রিজের পাড়। বিনোদনপ্রেমী মানুষের দীর্ঘদিনের আশা নদীর পাড়ের একটি বিনোদনের জন্য একটি পার্ক গড়ে উঠুক। অলস সময়ে ইট পাথরের শহর ছেড়ে প্রকৃতি ও নদীর টানে ছুটে আসা মানুষের জন্য ডিসি পার্ক হলে এটি শুধু মানুষের মনোরঞ্জনের খোরাক হবেনা, এটি হলে জেলার অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগও হবে। সরকারে পড়ে থাকা ৩০ একর পরিত্যক্ত জমির সদ্ব্যবহার হবে।
এ ছাড়া পাশেই গড়ে উঠছে অর্থনৈতিক অঞ্চল। ফলে জেলা ও জেলার বাইরে থেকে ছুটে আসা মানুষের ক্লান্তিতে স্বস্তি যোগাবে এই পার্কটি। স্থানীয়দের দাবি প্রস্তাব আর প্রস্তাবনার মধ্যে পার্কের কাজটি যেন ব্যাহত না হয়, অতি দ্রুত ডিসি পার্কের কার্যক্রম শুরু হোক।
ব্রিজ পাড়ে ঘুরতে আশা শিক্ষার্থী মো. সাদিকুর রহমান বলেন, কুড়িগ্রামে ডিসি পার্ক হলে জেলাকে বাইরের রোল মডেল হিসেবে এই জেলা রিপ্রেজেন্ট হবে। দর্শনার্থীদের সমাগমে পূণর্তা আসবে।অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে জেলার মানুষের উন্নয়ন হবে বলে জানান তিনি।
ধরলা ব্রিজ পাড়ের বাসিন্দা মো. ফজলুল হক বলেন, কুড়িগ্রাম ডিসি পার্ক হওয়ার খবর শুনেছি। এটি হলে আশপাশের অনেক মানুষের ব্যবসা বাণিজ্য ও নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। কুড়িগ্রাম ডিসি পার্ক হলে এখানকার মানুষজনের জীবন জীবিকার উন্নয়ন হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ বলেন, কুড়িগ্রাম ডিসি পার্কটি বাস্তবায়ন হলে জেলার মানুষের নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। এটি নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। নামকরণের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। যে নামেই হোক না কেন নাম কোনো বিষয় না। কুড়িগ্রামের উন্নয়ন হোক এটাই চাই।
নাগরিক কমিটি কুড়িগ্রাম জেলা সংগঠক মো. মুকুল মিয়া বলেন, কুড়িগ্রামের মানুষের বিনোদনের জন্য কোনো জায়গা নেই। ধরলা ব্রিজের পূর্বপাড়ে সরকারের প্রায় ৩০ একর জমি পড়ে আছে। সেখানে কুড়িগ্রাম ডিসি পার্ক হলে জেলাবাসী বিনোদনের একটা জায়গা পাবে। আমরা জেলা সমন্বয় মিটিং এ কুড়িগ্রাম ডিসি পার্ক নামকরণ করার মতামত দিয়েছি। নাম যাই হোক দ্রুত কার্যক্রম শুরু করার অনুরোধ জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, কুড়িগ্রামে চিত্ত বিনোদনের তেমন কোনো জায়গা না থাকায় ধরলা ব্রিজের পূর্ব প্রান্তে মাধবরাম এলাকায় জেলার সব রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের মতামত নিয়ে কুড়িগ্রাম ডিসি পার্ক গড়া উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এটি হলে সরকারে পড়ে থাকা ৩০ একর পরিত্যক্ত জমির সদ্ব্যবহার হবে পাশাপাশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
টিএইচ