একসময় ঝিনাই নদীতে সারা বছর থাকত পানিতে টইটম্বুর। নদীর বুকে পাল তুলে চলত ছোট-বড় নৌকা। দুই পাড়ের কৃষকেরা হাজার হাজার একর ফসলি জমিতে সেচ দিতেন এ নদী থেকে। সেই ঝিনাই এখন দখল ও দূষণে অস্তিত্বের সংকটে রয়েছে। নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় নদীর বুকে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন ফসল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাই নদীর উৎস শেরপুর জেলার পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে। জামালপুর সদর ও মেলান্দহ উপজেলার সীমান্তবর্তী হয়ে সরিষাবাড়ী উপজেলার মধ্যে দিয়ে টাঙ্গাইল জেলার বংশী নদীর মোহনায় মিলিত নদীটি। ১৩৩ কিলামিটার দৈর্ঘ্যের সর্পিলাকার প্রকৃতির ঝিনাই নদীর গড় প্রস্থ ৭৬ মিটার।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, নদীর বুকে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। নদীটি দিনে দিনে অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে। দখলের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা। নদী ভরাট করে নদীর বুকে গড়ে উঠছে পাকা ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নদী দখল ও পানি প্রবাহ না থাকায় মরে যাচ্ছে নদীটি। এই অবস্থায় নদীটি খনন ও দখলমুক্ত করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি স্থানীয়দের।
নদীর দুই পারের বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে খনন না হওয়ায় তলদেশে পলি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। দুই তীরে যাদের জমি রয়েছে, তাদের অনেকে নদীটি দখলে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া যাদের জমি নেই, তারাও বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে নদী দখল করছেন।
নদীর তীরবর্তী চরপলিশা এলাকার কৃষক আবদুল্লাহ বলেন, নদীর পাশ দিয়ে যাদের জমি ছিল তারাই দখল করেছে। এবং নদীর মধ্যে তারাই চাষ করছে। আমাদের দাবি নদীটি যদি খনন করা হয়।
জামালপুর জেলা নদী রক্ষা কমিশনর সদস্য জাহাঙ্গীর সেলিম বলন, ভূমিদস্যু ও এক শ্রেণির লোক ঝিনাই নদীকে মৃত করেছে। নদীর দুই পাড় দখল হয়ে গেছে। নদীর প্রবাহ বাধাগ্র্রস্থ নদীতে ফসল করছে। এছাড়াও অনক পলি জমে নদীটি ভরাট হয়ে গেছে। ঝিনাই নদীতে খনন করে নদীর প্রবাহ ফিরিয়ে আনার দাবি করেন তিনি।
এ বিষয় জামালপুর পানি উনয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলন, ঝিনাই নদী খনন করে প্রবাহ সচল করার জন্য ইতিমধ্যে বিআইডব্লিউটিএ একটি স্টাডি সম্পন করছে। তারা যদি এবিষয় কোনা প্রকল্প গ্রহণ না করে। তাহলে পরবর্তীত নতুন প্রকল্প গ্রহণ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
টিএইচ