রংপুরের মিঠাপুকুরে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর বিয়ে এবং বিয়ের আট মাস পর অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাকে তালাক-নামা প্রদান করায় বিপাকে পড়েছেন এক নারী। ঐ নারী তার শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান নিয়ে ন্যায় বিচারের আশায় ঘুরছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। প্রতারক স্বামী তাকে তালাক নামা পাঠিয়ে রয়েছেন আত্মগোপনে।
এদিকে ধর্ম ত্যাগ করায় তিনি ফিরতে পারছেন না তার সমাজ, পরিবার এবং আপনজনের কাছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার ০৩ নং পায়রাবন্দ ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামের মৃত-রজব আলীর পুত্র মোঃ রন্জু মিয়া তার পূর্বের দুই স্ত্রী এবং সন্তান থাকার পরেও নিজের পরিচয় গোপন রেখে ঘটকের মাধ্যমে নিজের ছদ্মনাম রায়হান ব্যবহার করে পাশ্ববর্তী রংপুর সদর উপজেলার পালিচড়া হিন্দু পাড়া গ্রামের শ্রীমতি-মিনতি রানী দেবনাথ (৫০) নামের এক স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে ধর্মান্তরিত করে এক লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে মুসলিম শরিয়া মোতাবেক কাবিননামা এবং বিয়ে সম্পূর্ণ করেন।
ঐ নারী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক আয়া হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ইসলাম ধর্মের নিয়মনীতি অনুযায়ী, ঐ নারী শ্রীমতিঃ মিনতি রানী দেবনাথ থেকে নাম পাল্টিয়ে হয়ে যান মোছাঃ মিনারা বেগম। তার স্বামী রঞ্জু মিয়া তাকে নিয়ে ঢাকায় একটি ভাড়া বাসায় উঠেন এবং ঘর সংসার চলাকালীন সময়ে বিগত-মাস দুয়েক আগে রন্জু মিয়া তাকে নিয়ে তার নিজ গ্রাম অভিরামনুরপুরে তার মায়ের কাছে রেখে উধাও হয়ে যান।
ঐ নারীকে রন্জু ভরণপোষণ না দেয়ায় তিনি প্রতিবেশীদের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করাকালীন অবস্থায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর ডাকযোগে রন্জু কর্তৃক তালাক নামার কাগজ প্রদান করায় ঐ নারী বিপাকে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এদিকে তার শ্বাশুড়ি তার বাড়িতে স্থান দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী। এ নিয়ে স্হানীয়রা একাধিকবার বসার পরও রন্জু পলাতক থাকায় কোন সুরাহা করতে পারেননি বলে জানা যায়।
ঐ নারী জানান, আমি মুসলমান হওয়ার খবর পাওয়ার পর আমার পরিবার আমাকে ত্যাজ্য সন্তান হিসেবে ঘোষণা করেছে। আমি দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এই অবস্থায় আমার ফিরে যাওয়ার কোন রাস্তা নেই। তাছাড়া আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নামাজ রোজা সব পালন করছি। ইসলামের সমস্ত বিধিবিধান মানছি। এই অবস্থায় আমি ন্যায় বিচার না পেলে মরন ছাড়া কোন উপায় নেই।
আসরাফুল ইসলাম নামে একজন জানান, রন্জু এর আগে একাধিক বিয়ে করে সেসব স্ত্রীদের ছেড়ে পালিয়ে এসেছে। তার কঠিন বিচার হওয়া দরকার। এখনো তার দুই স্ত্রী কষ্টে তার নিজ বাড়িতে খেয়ে না খেয়ে দিনপার করছে। তার উপর এই নারী।
জামাল নামে এক যুবক জানান, ঐ নারীকে আইনি সহায়তা দেওয়া দরকার। আমরা পাশে থাকতে চাই।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মোঃ রন্জু মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান আমার সংবাদকে জানান, ঐ নারী অভিযোগ দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
ইউপি-চেয়ারম্যান, মাহবুবার রহমান মাহবুব জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। স্হানীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এআই