শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
The Daily Post

ধানসিঁড়ি নদীগর্ভে যাচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী 

ঝালকাঠি প্রতিনিধি

ধানসিঁড়ি নদীগর্ভে যাচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী 

ঝালকাঠি শহর থেকে পিংড়ি হয়ে ধানসিঁড়ি নদীর দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। ঝালকাঠি সদর এবং রাজাপুর উপজেলার সীমান্ত ধানসিঁড়ি নদীটির উপর ব্রিজ দিয়ে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। ধানখেত ও ছোট ছোট বসতবাড়ি পেরিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে বিটুমিন বিছানো পাকা সড়ক। 

এই সড়ক নীল-সবুজ স্কুলড্রেস পরে রঙিন ব্যাগ নিয়ে ছোট ছোট মেয়েরা ব্যাটারিচালিত রিকশায় চেপে অথবা পায়ে হেটে স্কুলে যাচ্ছে। এই পাকা রাস্তাটির কারণে তাদের স্কুলে যাতায়াত সহজ হয়েছে। একটু পরপরই তাদের রিকশাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায় ছোট ছোট পিকআপ ও ভ্যান। 

এসব পিকআপ ও ভ্যান বাজারে কৃষিপণ্য অথবা বিভিন্ন গ্রামে নির্মাণসামগ্রী নিয়ে যায়। জনগুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তাটি খননকৃত ধানসিঁড়ি নদীতে ভেঙে যাচ্ছে। নদীর তীরে রাস্তার পাশে সৃজিত আমড়া গাছও দেবে গেছে নদীতে। রাস্তার স্থায়িত্ব নিয়ে হতাশায় রয়েছে স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানান, মানুষের জীবনে গতিশীল করে তুলেছে পাকারাস্তা। 

রিকশা ও ভ্যানচালকদের জীবন সহজ হয়ে উঠেছে পাকারাস্তার সুবাদে, তারা যান্ত্রিক বাহন ব্যবহার করছেন। কিন্তু পিংড়ি হয়ে ধানসিঁড়ি নদীর উপর দিয়ে সদর উপজেলার সাচিলাপুর গ্রামে যেতে ধানসিঁড়ি নদীর গর্ভে বিলীন হতে চলছে রাস্তাটি। 

সড়কের অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে পড়েছে যে এ রাস্তা মোটরচালিত যান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী। চালক ও যাত্রীদের জন্য দুর্ভোগের উৎস হয়ে উঠেছে এ সড়ক। ভাঙন প্রতিরোধ করা না হলে রাস্তাটিও এক সময় বিলীন হয়ে যাবার আশঙ্কা করছেন তারা। 

নিজের দোকানের জন্য রড, সিমেন্টসহ নির্মাণসামগ্রী আনেন জাবেদ আল-হাসান। তিনি বলেন, জেলা শহর থেকে সাচিলাপুর-কিস্তাকাঠি এলাকার সরল এ পথে ইট, বালি ও সিমেন্ট আনতে রাজি হয় না পিকআপ-ভ্যান চালকরা। রাস্তার পাশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভারী মালামাল নিয়ে যাতায়াতের সময় যদি দেবে গাড়ি উল্টে যায় তাহলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। প্রতি ট্রিপে স্বাভাবিকের চেয়ে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বাড়তি ভাড়া দিয়ে পণ্য আনতে হয়।

অটোরিকশা চালক হারেছ মিয়া বলেন, এই সড়কে গাড়ি চালাতে ভয়ে থাকতে হয়। রাতে তো চালানোই যায় না। সোজা সড়কটি এমনভাবে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে যা রাতে বুঝাই যায় না। দিনেও একটি গাড়ি অপর একটি গাড়িকে অতিক্রম করতে পারে না। যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 

ওই এলাকার বাসিন্দা সাঈদ বলেন, ধানসিঁড়ি নদী খননের ফলে নাব্যতা ফিরে আসায় এলাকাবাসী আমরা খুবই খুশি হয়েছিলাম। এখানে আমাদের জমির উর্বর শক্তি বাড়বে, ফসলের ফলন ভালো হবে। ব্রিজের উপর দাড়িয়ে ধানসিঁড়ি নদীর ঢেউ দেখতাম। সেই রাস্তা যখন নদীগর্ভে বিলীন হতে যাচ্ছে তা দেখে মারাত্মক আশাহত হয়েছি। রাস্তাটি রক্ষা করতে না পারলে এলাকার কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াত ও কৃষি পণ্যসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় মালামাল সরবরাহে দারুণ ভোগান্তী পোহাতে হবে। 

ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম নিলয় পাশা বলেন, বিষয়টি ইতোপূর্বে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। আপনার কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। কালকেই অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে বিষয়টি দেখতে পাঠাবো। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

টিএইচ