বগুড়ার ধুনটে এক গ্রামে প্রথম মেডিকেলে চান্স পেয়েছেন যমজ ৩ ভাই। মেডিকেলে চান্সপ্রাপ্তর হলো উপজেলার বথুয়াবাড় গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে মাফিউল হাসান, শাফিউল ইসলাম ও রাফিউল ইসলাম।
জানা যায়, মেধাবী ৩ শিক্ষার্থীর বয়স যখন ৫ মাস, তখন তাদের বাবা গোলাম মোস্তফা হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর থেকে মা মর্জিনা খাতুন তাদের দেখা শোনা করেন। তারা বড় হওয়ার পর থেকেই চিকিৎসক হয়ে অভাবী মানুষের সেবা করবে এমনটাই ভাবনা চিন্তা নিয়ে পড়ালেখা করতে থাকে।
আজ তাদের সেই স্বপ্নপূরণের শুভক্ষন। ৩ ছেলেকে পড়ালেখা করাতে স্বামীর ভিটেবাড়ি আর বাবা বাড়ির সামান্য জমি সবটুকুই বিক্রি করে দিয়েছে মা মর্জিনা খাতুন। তারা ধুনট নবির উদ্দিন পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও পরে বগুড়া সরকারি শাহ সুলতান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তির্ন হয়।
কলেজে পড়ার সময় একটি মেসে একসাথেই পড়ালেখা করতেন তিন ভাই। শুধু স্কুল-কলেজই নয়, অধিকাংশ স্থানেই তাদের যাতায়াতও ছিল একই সাথে। তিন যমজ ভাইয়ের মধ্যে মাফিউল হাসান গত বছর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে চান্স পায়। এবার অপর ২ ভাই সাফিউল দিনাজপুর মেডিকেলে ও রাফিউল হাসান নোয়াখালী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছেন।
স্বপ্নবাজ ৩ ভাই জানান, আমরা তিন জমজ ভাই বগুড়ায় ছাত্রাবাসে একই সঙ্গে থেকে সরকারি শাহ সুলতান কলেজে পড়েছি। মা কষ্ট করে এবং জমি বিক্রি করে পড়ালেখা করিয়েছেন। কখনোই আমাদের কষ্ট করতে দেয়নি। তারা আরও জানান, বথুয়াবাড়ী গ্রামের মধ্যে আমরাই প্রথম মেডিকেলে চান্স পেয়েছি।
বাবা বেঁচে থাকলে আজ কত খুশি হতেন। বাবাকে হারিয়েছি শিশুকালে। অসুস্থ হয়ে বাবা মারা যান। টাকার অভাবে ভালো চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। তখন থেকেই তিন ভাই প্রতিজ্ঞা করি মেডিকেলে পড়ব এবং গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা করবো।
টিএইচ