সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post
৮০ ভাগ ধানের মিল বন্ধ

নওগাঁয় ব্যাংকের ৩ হাজার কোটি টাকা খেলাপী ও কুঋণ 

নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় ব্যাংকের ৩ হাজার কোটি টাকা খেলাপী ও কুঋণ 

ধান চালের জেলা নওগাঁয় নানা সংকটে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে জেলায় প্রায় ৮০ ভাগ মিল চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে। দেনা থেকে মুক্ত হতে আদালতে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন করেছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারের নানা নীতিমালা আর  চড়া সুদের ঋণে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে  না পারায়  মিল বিক্রি করে বিকল্প ব্যবসায় ঝুঁকছেন অনেকে। মিল বন্ধ হওয়ায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষ কর্ম হারিয়েছেন দাবি ব্যবসায়ী নেতাদের। অন্যদিকে এ খাতে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা খেলাপী ও কুঋণে বিপাকে ব্যাংকগুলো। 

বিস্তৃত মাঠজুড়ে ধানের আবাদ। ৩ মৌসুমে অন্তত ৩০ লাখ টন ধান উৎপাদন হয় নওগাঁর বরেন্দ্র জনপদে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ৭০ ভাগ ধান হাট ঘুরে চলে যায় ব্যবসায়ীর চাতালে। এক সময় কর্মচঞ্চল ধানের চাতাল ও অটোরাইসমিল এখন ব্যবসায়ীর গলার কাটা। ব্যাংকের ঋণের টাকায় গড়ে তোলা চাতাল ও অটোরাইচমিল বাজার প্রতিযোগিতায় ঠিকতে না পেরে একে একে বন্ধ করে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বন্ধ হওয়ায় এসব মিল চাতালে এখন সবুজ তরু লতার রাজত্ব। 

কৃষি নির্ভর এ জেলায় ব্যবসা বাণিজ্যর প্রধান কারবার হয়ে উঠে ধানের চাতাল ও অটোমিল। গত দু দশক আগে ১২শ হাসকিং মিল ও অর্ধশত অটোরাইচমিল গড়ে উঠলেও নানা কারণে বর্তমানে ৮০ শতাংশ বন্ধ। ফলে কর্ম হারিয়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ।  

 নওগাঁর মহাদেবপুরের ওসমান এগ্রোর পরিচালক ওসমান আলী বলেন, আমরা ঋণের জালে আটকে এখন দেউলিয়া হতে চলেছি। ভঙ্গুর এ অবস্থা থেকে আমরা সরকারের সহযোগিতা চাই। 

একের পর এক মিল চাতাল বন্ধ হওয়ার জন্য ধানচাল কারবারে সরকারের নানা পরিকল্পনা আর কর্পোরেট ব্যবসায়ীদের দাপটকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ী নেতারা। নওগাঁ জেলা মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, সরকারের কাছে বিষয়টি নিয়ে বারবার আমরা আবেদন করেছি কিন্তু কোন সাড়া পাচ্ছি না। দিনের পর দিন এখন এ শিল্প মৃত ঘোষণার অপেক্ষা। আমাদের এ খাত দুর্বল করে কর্পোরেট ব্যবসায়ীরা দখল করে নিচ্ছে ধানচালের বাজার ফলে আমরা তাদের সঙ্গে পেরে উঠছি না। 

জেলায় ভারী কোন শিল্প কলকারখানা নেই। এর মধ্যে এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় নতুন একটি শিল্প একটি শিল্প ইউনিট গড়ে তোলার প্রস্তাবনা নিয়ে কাজ করছে বিশিক শিল্প। নওগাঁ বিসিক উপ-ব্যবস্থা পক মো. শামিম আক্তার মামুন বলেন, আমরা ২শ একরের একটি শিল্প ইউনিট গড়ে তোলার জন্য প্রকল্প দিয়েছি। 

 মিল মালিক সমিতির তথ্য বলছে সরকারি ও বেসরকারি ৩৫ টি ব্যাংকের এ জেলায় ধানচাল কারবারে বিনিয়োগ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। যার বেশিরভাগ এখন খেলাপী ও কুঋণে পরিনত হয়েছে। আর দেনা থেকে মুক্ত হতে কয়েকজন ব্যবসায়ী নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণার আবেদন করেছেন আদালতে।

টিএইচ