ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় ৮৫০০ হেক্টর জমি বর্ষাকালে জলাবদ্ধ থাকে। ওই জমিতে ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদ কৌশলকে জনপ্রিয় করতে নবীনগর উপজেলায় ৪টি স্থানে পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের বাশবাজার, সলিমগঞ্জ, নবীনগর পূর্ব উল্লিখিত স্থানে প্রথমবারের মতো প্রদর্শনী বাস্তবায়ন করা হয়।
ইব্রাহিমপুর গ্রামের কৃষক ইসমাইল জানান, টিভিতে এই ধরনের ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদ দেখেছি, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আমি এবার নিজেই এটি বাস্তবায়ন করেছি। ইতোমধ্যে ২০ হাজার টাকার কলমি শাক, শসা, লাউ বিক্রি করেছি। ফসলের উৎপাদন অনেক ভালো, রোগ বালাই খুবই কম। আশা করি অনেকেই আগামীতে এই প্রযুক্তি গ্রহণ করবে।
বগডহর গ্রামের কৃষক টিপু মুন্সী বলেন, বর্ষাকালে আমাদের এই হাওরে সবজি আবাদ হবে এটি আমাদের জন্য স্বপ্নের মতো। আমি ২০ শতক জমিতে লাউ, চালকুমড়া আবাদ করেছি। ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি অফিসার গিয়াসউদ্দিন নাঈম জানান, এই জমিগুলো বছরে ৫ থেকে ৬ মাস পানিতে নিমজ্জিত থাকে। ভাসমান পদ্ধতিতে কমিউনিটি ভিত্তিতে সবজি আবাদ করে ইতোমধ্যে লাউ, শসা, কলমি শাক, পালংশাক উৎপাদন করা হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে।
জলাবদ্ধ জমিতে ভাসমান পদ্ধতিতে ঢালি কিংবা বেড তৈরি করে চাষাবাদ কৌশলকে ছড়িয়ে দিতে উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর স্থানীয় কৃষকদের নিয়ে কাজ করছে যা আগামী দিনে নিরাপদ এবং অসময়ে সবজি উৎপাদন করে খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, ভাসমান পদ্ধতিতে কৃষকদের আবাদ কৌশল শিখাতে ফ্রিপ প্রকল্পের আওতায় দুই শতাধিক কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ভাসমান কাঠামো তৈরি এবং বীজ সার দিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করছে। প্রযুক্তিটি নিরাপদ কৃষি উৎপাদন প্রযুক্তি হিসেবে ইতোমধ্যে সমাদৃত হয়েছে। আগামীতে এই প্রযুক্তি সবজি চাষ এই অঞ্চলের জন্য দারুণ সম্ভাবনাময়।
টিএইচ