সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১
The Daily Post

নরসিংদী পৌর এলাকায় অটোরিকশা ভাড়ায় নৈরাজ্য 

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদী পৌর এলাকায় অটোরিকশা ভাড়ায় নৈরাজ্য 

নরসিংদীতে বিভিন্ন পরিবহনে চলাচল করা যাত্রীদের কোনো ক্ষেত্রেই যেন ভোগান্তির শেষ নেই। পদে পদে ঠকতে হচ্ছে নরসিংদী পৌরবাসীকে। দিন দিন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ভাড়া। 

পৌরসভা কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিলোমিটার অনুপাতে ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া উচিত হলেও তা এখনো পর্যন্ত হয়নি; ফলে ভাড়া আদায়ে চলছে নৈরাজ্য। নরসিংদী পৌরসভায় যারা নিয়মিত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়েন, তাদের অভিযোগের যেন কোনো শেষ নেই। 

পৌর মেয়র কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভাড়া বেঁধে দেয়ার আইন না থাকায় নানান ফন্দিতে  ভাড়া বেশি নেন চালকরা। ব্যাটারিচালিত  অটোরিকশা চালকদের ভাড়ানৈরাজ্য, অন্যান্য পরিবহনের সংকট, যানজটসহ নানা কারণে যাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হয়। আর এ সুযোগে অটোচালকরা ভাড়া বেশি নেয়ার চেষ্টা করেন। চালকদের শর্ত মেনেই অটোতে চড়তে হয় যাত্রীদের।

জানা যায়, নরসিংদী পৌরসভায় প্রায় ১০ হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পাশাপাশি চলছে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশাও। মনিটরিং না থাকায় নরসিংদী পৌর এলাকায় নৈরাজ্য চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকদের। বিশেষ নজরদারি না থাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরাও চালাচ্ছেন ভাড়ানৈরাজ্য। 

যাত্রীদের জিম্মি করে চালকরা ইচ্ছেমতো ভাড়া হাঁকছেন। আগে থেকেই নরসিংদী পৌরসভার এক এলাকা থেকে অন্যান্য এলাকায় ভাড়া  নির্ধারিত থাকার পরও সম্প্রতি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা পৌর কর্তৃপক্ষ কিংবা সংশ্লিষ্টদের কারো সঙ্গে আলাপ না করেই পাঁচ টাকার ভাড়া ১০ টাকা করাসহ বিভিন্নভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী থেকে সাধারণ যাত্রীদের হয়রানি করছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিতে রাজি না হলে যাত্রীদের চাহিদামতো গন্তব্যে যেতে রাজি হয় না তারা।

নরসিংদী পৌর এলাকার পুরাতন  বাসস্ট্যান্ড থেকে রেলস্টেশন কিংবা পুরাতন বাসস্ট্যান্ড থেকে নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সাটিরপাড়া কালী কুমার ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইউএমসি জুট মিলস হয়ে নাগরিয়াকান্দি ব্রিজ এলাকায় এবং রেলস্টেশন থেকে ভেলানগর বাজার এলাকায়  যাতায়াতকারী যাত্রীদের ভাড়া নিয়ে বেশি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। 

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক জাহাঙ্গীর আলম  বলেন, সারা দিনে একটি গাড়ির জমা ৪০০ টাকা। অটোরিকশার দৈনিক জমা তো আর মালিকরা কম নেন না। যাত্রীরা একটু বেশি ভাড়াতেই অটোতে চলাচল করেন। আমরা তো আর জোর করে ভাড়া বেশি নিই না। তাছাড়াও  দ্রব্যমূল্য যেভাবে বাড়ছে, পাঁচ  টাকার ভাড়া ১০ টাকা না নিলে মহাজনকে জমার টাকা দেব কীভাবে আর আমরা চলব কীভাবে? আবার পৌরসভার লোকও প্রতিদিন ১০ টাকা করে নেয়। 

ইউসুফ নামে আরেক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক বলেন, প্রতিদিন অটোরিকশা জমা ৩০০ টাকার পরিবর্তে এখন ৪০০ টাকা দিতে হয়। গাড়ির জমা ৪০০ টাকা দেয়ার পর নিজের খরচ শেষে  চলার মতো টাকা নিয়ে বাসায় ফেরা যায় না। কোনো কোনো দিন এর কমও হয়। মালিক তো তখন বেঁধে দেয়া জমার টাকার কম নেয় না।  আর সিগন্যালে আটকা পড়লে সারা দিনের লাভ শেষ। 

এ বিষয়ে নরসিংদী পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন বাচ্চু আমার সংবাদকে জানান, পৌর এলাকাতে হঠাৎ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি তিনি কিছুই জানেন না। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলো অবৈধ। পৌরসভার সঙ্গে অনুমতির বিষয়ে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়া না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।

টিএইচ