ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ৬নং রাজগাতী ইউনিয়নের দরিল্লা মৌজায় রেললাইন সংলগ্ন সরকারি জায়গা দখল করে স্থানীয় দুই ব্যক্তি পুকুর তৈরি করেছে। এতে পানি নিষ্কাশনের পথ বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় প্রায় ১০০ একর জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
ফলে গত দুই বছর যাবত কৃষকরা তাদের জমিতে আমন, বোরো বা কোন ধরনের ফসল আবাদ করতে পারছে না। যেখানে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী থাকবে না।
এ বিষয়ে কৃষকরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দারস্থ হলেও এর কোন সুরাহা পায়নি। বেশ কয়েকজন কৃষকের একমাত্র সম্বল জমিটুকুতে কোন আবাদ না করতে পেরে খুবই কষ্টে দিনাতিপাত করছে।
সরজমিন পরিদর্শনে দেখাগেছে, পাছদরিল্লা এতিমখানা মাদ্রাসার দক্ষিণে মাগুরা বিল। সেখানে মাগুরা বিলের পশ্চিম পাশে রেললাইন রয়েছে। সেই রেললাইনের পাশে প্রায় ১০০ একর জমি অনাবাদি রয়েছে। বর্তমানে ওই জমিতে কচুয়া তথা জারমুনী গাছে ভরপুর সর্বত্র। তাতে প্রায় ৩ ফুটের উপরে জলাবদ্ধতা। ওই জমির পানি যেপথ দিয়ে নিষ্কাশন হতো, সেপথে দুইজন ব্যক্তি পুকুর তৈরি করায় আর পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।
জানাগেছে, স্থানীয় দুই ব্যক্তি রেলওয়ের সরকারি জায়গা দখল করে বিশাল আকৃতির পুকুর তৈরি করে সেখানে মাছ চাষ করছে। ভোক্তভোগী কৃষকরা তাদেরকে একাধিকবার বলার পরেও তারা পানি নিষ্কাশনের কোন বন্দোবস্থ করেনি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আতাউর রহমান বলেন, অভিযোগ করেও এর কোন সুনির্দিষ্ট সুফল পাচ্ছেন না। এছাড়া ওই ফিশারিতে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের মাধ্যমে মাছ করে যাচ্ছে।
কৃষক হারিছ উদ্দিন বলেন, “আমার ৫০ শতক জায়গায় আগে সোনার ফসল ফলাইতাম, ফলে ছয় মাস ঘরের ভাত খাইতাম। এখন জলাবদ্ধতার কারণে পারি না। কষ্টে দিনযাপন করছি।”
এছাড়া আরও কয়েকজন কৃষক জানান, “এখানের অনেক জমি আমরা বন্ধকী রাখছিলাম। কিন্তু জলবদ্ধতার কারণে চাষাবাদ করতে পারছি না। দ্রুত এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে আমরা কৃষকরা উপকৃত হতাম।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির সাথে সেলফোনে কথা হলে তিনি রাগান্বিত্ব কণ্ঠে বলেন, সেটা আমার বিষয়। আমি সরু পাইপ দিয়ে রেখেছি। অভিযোগকারীরা আমাকে কিছুই বলেনি। আমার নামে গিয়ে মামলা করে দেন বলে ফোনকল কেটে দেন।
নান্দাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এটিএম আরিফ বলেন, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে সরজমিন তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টিএইচ