কাঁচা বাজারে নিষিদ্ধ করার পরও দেদারছে পলিথিনের ব্যবহার চলছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের কারও এ নিয়ে কোনো ধরনের বাছবিচার চোখে পড়ছে না।
এ বিষয়ে ক্রেতারা বলেন, কোথাও থেকে বাজারে আসলে তো ব্যাগ আনা যায় না। সরাসরি বাসা থেকে এলে হয়ত ব্যাগ আনা যেত। আর বড় কথা হল বিকল্প না রেখে পলিথিন বন্ধ করে আবার জরিমানা করলেই তো হল না। আগে বিকল্প লাগবে, না হয় শুধু বিড়ম্বনাই হবে মানুষের। পরিবেশের সুরক্ষায় দুই যুগ আগেও পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
তবে তা যেন ভুলেই গেছেন মানুষ। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়। পাশাপাশি ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারগুলোতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে অভিযানের কথা জানানো হয়। একই সঙ্গে পলিথিন ও পলিপ্রোপাইলিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, মজুদ, পরিবহন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এর বিরুদ্ধে অভিযানও নেমেছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়। পলিথিন জব্দের পাশাপাশি জরিমানাও করা হচ্ছে।
তবুও নিষেধাজ্ঞার দুই সপ্তাহ পর বিকল্প না থাকার অজুহাতে উপজেলার বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে স্থানীয় ছোট বড় কাঁচা বাজারগুলোতে পলিথিনে পণ্য দেয়া হচ্ছে আগের মতোই। তবে সুপারশপে পলিথিন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আসার প্রায় দেড় মাস পর সেখানে অনেকটাই পরিবর্তন চোখে পরেছে।
পলিথিনের বদলে এখন সেখানে কাগজের ঠোঙায় পণ্য দেয়া হচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে কাপড় বা পাটের ব্যাগ। ক্রেতারা বাধ্য হয়ে সেসব ব্যাগ কিনছেন কিংবা বাসা থেকে ব্যাগ নিয়ে আসছেন। চার দেয়ালের সুপারশপে এমন পরিবর্তন আনা সম্ভব হলেও কাঁচাবাজারগুলোর পরিস্থিতি পাল্টানো বেশ কঠিন হবে বলে মনে করছেন ক্রেতা- বিক্রেতারা।
বুড়িচং উপজেলার নিমসার বাজারের সবজি বিক্রেতা আব্দুল হামিদ বলেন, গ্রাহক তো পলিথিন ছাড়া মাল নিতে চায় না। কেউ ব্যাগ নিলে তাকে সেটাতেই দেয়া হয়। আমাদের তো বিক্রি করে খেতে হবে। পলিথিনে না দিলে আরেক দোকানে চলে যায়। যদি সব দোকানে এক সাথে পলিথিন দেয়া বন্ধ করতে পারে, তাহলে কাজ হবে।
না হয় পলিথিন চলতেই থাকবে। এই দোকানি এ বাজার থেকেই এইদিন সকালে এক কেজি পলিথিন কিনেছেন দুশত ১০ টাকা দিয়ে। তিনি দোকান থেকে পলিথিন কিনেছেন তার পাশের পলিথিনের বাকি দুই দোকান বন্ধ ছিল সারাদিন। যেটি খোলা ছিল সকালে, সেটিও বন্ধ হয়ে যায় দুপুরে।
অনেকটা গোপনে পলিথিনের বেচা-কেনার তথ্য দেন অনেক পণ্য বিক্রেতা। তারা বলেন মূলত জরিমানার ভয়ে সেসব দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বাজারে সবজি ও মুদি পণ্যের মতো মাছ মাংস বিক্রিতেও পলিথিন ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার সাহিদা আক্তার জানান, সরকারি নির্দেশনা পাওয়ার পর বিভিন্ন মসজিদের ইমাম সাহেবদের মাধ্যমে মুসল্লিদের মধ্যে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য বলা হয়েছে। বিভিন্ন বাজার পরিচালনা কমিটি বা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমরা পলিথিনের কুফল সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তুলছি।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার নিমসারে গত ৭ অক্টোবর পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে নিষিদ্ধ পলিথিন শপিংব্যাগ মজুত ও বিক্রয়ের অপরাধে ২টি মামলায় ৪ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং ৬৫ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে, উপজেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ফকির বাজার, কালিকাপুর, শংকুচাইল বাজারে পলিথিনের দেদারছে ব্যবহার হতে দেখা গেছে।
টিএইচ